গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি তো আওয়ামী লীগের কোনো দুর্দিন দেখি না। মাওলানা ভাসানী ও বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ আর শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ এক নয়। বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ ছিল গরিব মানুষের আওয়ামী লীগ, যে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের স্বাধীনতা এনেছে। সেই আওয়ামী লীগ আর শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ এক নয়।’
আজ শুক্রবার দুপুরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কাদের সিদ্দিকী এ কথা বলেন।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলাম। সবাই তখন ইঁদুরের গর্তের মধ্যে ছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করার জন্য যাদের কাছ থেকে সম্মান পাওয়ার কথা ছিল, তারা আমাকে কোনো সম্মান করেনি বা দেখায়নি। বরং তাদের থেকে অসম্মানিত হয়েছি। তবে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অনেক সম্মান পেয়েছি।’
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি আজ একটি কথা অবশ্যই বলব। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাফল্য আমি মনেপ্রাণে কামনা করি ও বিশ্বাস করি। তবে টুঙ্গিপাড়াবাসীকে ধন্যবাদ জানাই, এই দুর্যোগের মধ্যেও তাঁরা বঙ্গবন্ধুর কবরকে মর্যাদার সঙ্গে রক্ষা করেছেন। আমরা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশকে স্বাধীন করেছি। বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার করে বাংলাদেশে নেতৃত্ব করা যাবে না। বঙ্গবন্ধুকে স্বীকার করে, সম্মান করে, যতটা সম্মান তাঁর প্রাপ্য, ততখানি সম্মান দিয়েই আমাদের চলতে হবে।’
কাদের সিদ্দিকী আরও বলেন, ‘যে মূল্যবোধ দিয়ে আমরা বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিলাম, সেই মূল্যবোধ এখন আর নেই। বঙ্গবন্ধুকে পেয়ে আমি দেশকে ভালোবাসতে শিখেছি। অনেকে দেশপ্রেমের কথা বলেন, কিন্তু দেশপ্রেম এত সহজ জিনিস নয়। এটা অর্জন করতে নানা ঘাত-প্রতিঘাত পার করতে হয়।’ তিনি বলেন, ‘ঝড়-তুফান এলে আবার তা কেটে যায়। কোনো অন্ধকারই চিরস্থায়ী নয়। কোনো দুর্যোগ স্থায়ী নয়। আকাশ আবার পরিষ্কার হবে। বঙ্গবন্ধুর মাজারে আজ আমাকে একজন জিজ্ঞাসা করেছিলেন, আপনি কতক্ষণ শেখ হাসিনার সঙ্গে থাকবেন? আমি বলতে পারি যতক্ষণ উনি (শেখ হাসিনা) বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সঙ্গে থাকবেন, ততক্ষণ আমি তাঁর সঙ্গে থাকব।’
এর আগে কাদের সিদ্দিকী বেলা পৌনে একটায় বড় ভাই ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী এবং দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর কবর জিয়ারত করেন। এ সময় তিনি দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন। সেখানে অন্যদের মধ্যে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নেতা ফরিদ আহমেদ, আবদুর রহমান, পারভেজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।