নয়াবার্তা প্রতিবেদক : রাজস্ব আদায় ৬৫ হাজার কোটি টাকা বাড়লে কর-জিডিপি অনুপাত দুই–শতাংশীয় পয়েন্ট বাড়বে বলে মনে করছে দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান। এতে কর-জিডিপি অনুপাত ১০ দশমিক ৪ শতাংশে উন্নীত হবে।
আজ বুধবার পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেছে। সংস্থাটি আরও বলেছে, এই বাড়তি রাজস্ব বিভিন্ন খাতে সরকার বিনিয়োগ করলে তা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি দশমিক ২ শতাংশ বাড়াবে। এই অর্থ আদায় করা গেলে তা জিডিপির দশমিক ৫ শতাংশ বাড়তি রাজস্ব আদায়ের আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত পূরণে সহায়তা করবে।
বনানীর পিআরআই কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। এতে বক্তব্য দেন পিআরআই চেয়ারম্যান জাইদী সাত্তার, নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর এবং পরিচালক আবদুর রাজ্জাক। এ ছাড়া পিআরআই পরিচালক বজলুল হক খন্দকার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
পৃথিবীর যেসব দেশে কর-জিডিপি অনুপাত সবচেয়ে কম, বাংলাদেশ তার অন্যতম।
পিআরআই আরও বলেছে, রাজস্ব আদায় বাড়লে সরকার বাড়তি অর্থ খরচ করতে পারবে, যা দারিদ্র্য বিমোচনের গতি বাড়াবে। এতে প্রতিবছর অতিরিক্ত দশমিক ৯ শতাংশ হারে দারিদ্র্য বিমোচন হবে।
বাড়তি রাজস্ব আদায় সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নের পরামর্শ দিয়েছে পিআরআই। একই সঙ্গে দুর্নীতি কমানো, অটোমেশন, করছাড় হ্রাসের কথা বলেছে পিআরআই। এ ছাড়া ভ্যাট আইনের মূল দর্শন অনুসারে ভ্যাট হার ১৫ শতাংশে রাখার পক্ষে মত দিয়েছে সংস্থাটি।
পিআরআই নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘নতুন সরকার এসেছে। এখন রাজস্ব খাত সংস্কারের সময়। বিড়ালের ঘণ্টা বাঁধার সময় এখনই। সেই লক্ষণ কি দেখছি? সামনে বাজেট আসছে, এই বাজেটে সংস্কারের প্রতিফলন থাকা উচিত।’
আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, সম্প্রতি আইএমএফের একটি দল বাংলাদেশ ঘুরে গেছে। তারা বলেছে, কোথায় কীভাবে করছাড় কমাতে হবে। কিছু পদক্ষেপ আগামী বাজেটে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আইএমএফ। আহসান এইচ মনসুরের মতে, শুধু করছাড় কমিয়ে আগামী অর্থবছরে বাড়তি ৩০ হাজার কোটি টাকা আদায়ের উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। করছাড় না কমিয়ে কর-জিডিপি অনুপাত ১৫ শতাংশ উন্নীত করা সম্ভব নয়। ব্রিটিশ আমলের ব্যবস্থাপনা দিয়ে তা হবে না। এ জন্য রাজস্ব খাতের মৌলিক সংস্কার লাগবে।
সংবাদ সম্মেলনে জাইদী সাত্তার বলেন, বাংলাদেশে উচ্চ শুল্ক আরোপের সংস্কৃতি আছে। উচ্চ শুল্ক হার বিনিয়োগকে বাধাগ্রস্ত করছে।
বজলুল হক খন্দকার বলেন, বাংলাদেশে মধ্যবিত্ত শ্রেণি বাড়ছে। তাই সহজেই কর জাল বৃদ্ধি করা সম্ভব। শহরের বাইরেও কর দেওয়ার সামর্থ্যবান মানুষ আছে।