নয়াবার্তা প্রতিবেদক : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ ফারুককে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল ও অশালীন আচরণের ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট তানভীর আহমেদ ভূঞা, সম্পাদক (প্রশাসন) অ্যাডভোকেট মো. আক্কাস আলী ও অ্যাডভোকেট জুবায়ের ইসলামকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।
আগামী ১৭ জানুয়ারি আদালতে স্বশরীরে হাজির হয়ে তাদের ওই ঘটনার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন। এ সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
এর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ ফারুককে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল ও তার সঙ্গে অশালীন আচরণের ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টে লিখিত অভিযোগ পাঠান। পরে প্রধান বিচারপতির নির্দেশে সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল বিচারকের ওই লিখিত অভিযোগ বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে পাঠান।
হাইকোর্টে পাঠানো আবেদনে বলা হয়, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ ফারুক কর্তৃক অত্র কোর্টে প্রেরিত পত্রে জানানো হয়েছে, তিনি গত ২ জানুয়ারি পূর্বাহ্নে যথাসময়ে বিচার কার্য পরিচালনার জন্য এজলাসে আরোহণ করে দৈনন্দিন কার্য তালিকায় নির্ধারিত মামলাগুলোর শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। এজলাস চলাকালীন সময়ে বার সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. তানভীর ভূঞা, সম্পাদক (প্রশাসন) অ্যাডভোকেট মো. আক্কাস আলী, অ্যাডভোকেট জুবায়ের ইসলামসহ প্রায় আনুমানিক ১০/১৫ জন আইনজীবী আসেন এবং তারা অশালীন ও অসৌজন্যমূলকভাবে তাকে এজলাস থেকে নেমে যাওয়ার জন্য বলেন। বারের সভাপতি আদালতকে উদ্দেশ্য করে উচ্চস্বরে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করেন।
এ সময় আদালতের এজলাসে কোর্ট ইন্সপেক্টর, আদালতের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্য, আদালতের কর্মচারী ও বিচারপ্রার্থী জনসাধারণ উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের মধ্য থেকে একজন সদস্য ঘটনাটি ভিডিও করেন। পরে ভিডিওটি তার হস্তগত হয়। তার দরখাস্তের অংশ হিসেবে ভিডিও ক্লিপটি তিনি আবেদনের সঙ্গে সংযুক্ত করেছেন।
হাইকোর্টে পাঠানো আবেদনে বলা হয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতিসহ অন্যান্য আইনজীবী কর্তৃক এজলাস চলাকালীন সময়ে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ ও অশালীন আচরণের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারকগণের নিরাপত্তা, বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি এবং শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে ওই অভিযোগের বিষয়টি নিষ্পত্তি হওয়া আবশ্যক। এজলাস চলাকালীন সময়ে আদালতে বিচারক ও কর্মচারীদের অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল ও অশালীন আচরণের জন্য আদালত অবমাননার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গতকাল ৪ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি হাইকোর্টে প্রেরণ করেন। আজ এ বিষয়ে শুনানি নিয়ে তিন আইনজীবীকে তলব করেন।