সিলেট ব্যুরো : প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ‘ঢাকায় বসে সিসিটিভির মাধ্যমে সিলেট সিটি নির্বাচনের সব কেন্দ্রের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবো। কোন ভোটার যদি সঠিকভাবে ভোট দিতে না পারেন তাহলে আপনারা চিৎকার দেবেন। আমরা সেখান থেকে বসে ব্যবস্থা নেবো।’ সিইসি বলেন, ‘আচরণবিধির অভিযোগ এলে প্রার্থিতা বাতিল হবে। আপনারা এমন কিছু করবেন না যাতে প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যায়।’
শনিবার দুপুরে নগরীর মেন্দিবাগে জালালাবাদ গ্যাস অডিটোরিয়ামে সিলেট সিটি নির্বাচনে প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলার সংস্কৃতি গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে সিইিসি বলেন, ‘অদৃশ্য খরচ অনেকেই করেন, সেটা আমরা বুঝি। কিন্তু তথ্য প্রমাণ না থাকায় আমরা ব্যবস্থা নিতে পারিনা। আপনারা যথাযত প্রমাণ দিতে পারলে আমরা সেভাবেই ব্যবস্থা নেবো।’
মতবিনিময় সভায় সিইসি বলেন, ‘কোনোভাবেই একজনের ভোট অন্যজন দিতে পারে না। যদি কেউ এমন ঘটনা প্রমাণ করতে পারেন তাহলে আমি নিজেই এর দায়ভার নেবো। তাই আপনারা সময়মতো ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিবেন।’
পলিথিনে মোড়ানো ব্যানার-পোস্টার নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আমরা এতো নিষ্ঠুর হতে পারবো না। এটা নিয়ে আইন আছে। পুলিশ চাইলে পলিথিনে মোড়ানো ব্যানার-পোষ্টার ছিঁড়ে ফেলতে পারে। আর এটি বৈশ্বিক সমস্যা। তাই সবাইকে সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা চিন্তা করে পলিথিন পরিহার করা উচিত।’
প্রচারণায় বিষয়ে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘ভবিষ্যতে প্রচারের ধরন পাল্টে যেতে পারে। এটা সময়ের প্রয়োজনে হবে। তথ্যপ্রযুক্তি এতে যোগ হবে। প্রার্থীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার চালাবেন। তাই আমাদের ভেবে দেখতে হবে- আগামীতে কীভাবে প্রচারণার অন্য ধরন আনা যায়।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইিসি বলেন, ‘নির্বাচন পর্যবেক্ষণে সাংবাদিকদের কার্ড প্রদানে নীতিমালা আছে। নীতিমালা অনুযায়ী যারা অনুমোদিত নন, তারা পাস কার্ড পাবেন না।’
৭ নম্বর ওয়ার্ডে অস্ত্রের মহড়া বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সিইসি বলেন, ‘এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আটক করা হয়েছে কয়েকজনকে।’
সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ড. মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার ইলিয়াছ শরিফ, সিলেট জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান, সিলেটের পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন, সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সাল কাদের, আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রার্থী হাফেজ মাওলানা মাহমুদুল হাসানসহ অন্য মেয়র প্রার্থী, কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিল প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, সিলেট সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে লড়াই করছেন ৮ জন। কাউন্সিলর পদে ৩৬০ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ২৭৩ জন সাধারণ ওয়ার্ডে এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে (নারী কাউন্সিলর) ৮৭ জন নারী প্রার্থী লড়াই করছেন। আগামী ২১ জুন ভোট গ্রহণ হবে। এবারই প্রথম ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হবে।