নয়াবার্তা প্রতিবেদক : অবশেষে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর উত্তম বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী ১০০১ টাকায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাবর রোডে নিজ দখলে থাকা তিনতলা বাড়িটির বরাদ্দ পেয়েছেন। কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকীর নামে সরকার ‘পরিত্যক্ত বাড়িটি’ অস্থায়ী বরাদ্দ দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মোহাম্মদপুর থানার বাবর রোডে পাঁচ কাঠা জমির ওপর তিনতলা এ বাড়ি স্বাধীনতার পর পরই কাদের সিদ্দিকী দখল করেন। বাড়ি তার দখলেই ছিল। এর আগে একাধিকবার বাড়িটি বরাদ্দ পাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে লিখিত আবেদন করেছিলেন। কিন্তু পাননি।
পরিত্যক্ত সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা বোর্ড সম্প্রতি বাড়িটি তার নামে বরাদ্দ দিয়ে চিঠি দিয়েছে। এক হাজার এক টাকা মূল্য ধার্য করে সরকার পাঁচ কাঠা জমিসহ তিনতলা ওই বাড়ির সাফকবলা দলিল করে দেয়। গত ৫ জুলাই কাদের সিদ্দিকীর নামে পরিত্যক্ত সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা বোর্ড থেকে বরাদ্দপত্র দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে বেশ কিছু শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়।
পরিত্যক্ত সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা বোর্ডের সিনিয়র সহকারী কমিশনার স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ২০/৩০, ব্লক-বি, বাবর রোড, মোরহাম্মদপুর ঢাকাস্থ পরিত্যক্ত বাড়িটি অস্থায়ীভাবে বরাদ্দ দেওয়া হলো। গণপূর্ত রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কর্তৃক ধার্যকৃত হারে ভাড়া পরিশোধ করতে হবে (শহীদ পরিবার/যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র প্রাপ্ত হলে ধার্যকৃত ভাড়ার পরিমাণ অর্ধেক হবে)। ধার্যকৃত ভাড়া গণপূর্ত রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কর্তৃক ট্রেজারি চালান পাস করিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে নিয়মিতভাবে পরিশোধ করতে হবে।
শর্তে আরও বলা হয়, সরকারের পূর্ব অনুমতি ছাড়া বরাদ্দকৃত বাড়িটির কোনো প্রকার পরিবর্তন, পরিবর্ধন বা মেরামত করা যাবে না। বাড়ির কোনো কিছু ক্ষতি বা বিনষ্ট হলে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর ধার্যকৃত পরিমাণ ক্ষতিপূরণ পরিশোধ করতে হবে। বাড়িটির বরাদ্দ প্রাপক কোনো অবস্থাতেই উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ ভিন্ন অন্য কারো কাছে বাড়িটির দখল হস্তান্তর করতে পারবে না। অন্যথায় বরাদ্দপত্র বাতিল বলিয়া গণ্য হবে।
কনজারভেন্সি, পানির বিল, পৌরকর, তিতাস গ্যাস বিল, বিদ্যুৎ বিল ইত্যাদি যথাযথভাবে বরাদ্দ প্রাপককেই পরিশোধ করতে হবে।
বরাদ্দ প্রাপক নিজে না থেকে অথবা আংশিকভাবে থেকে যদি অন্য কাউকে ভাড়া দিয়ে থাকেন তবে তাঁর বরাদ্দপত্র তাৎক্ষণিকভাবে বাতিল করে ৭ দিনের মধ্যে তাকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হবে।
সরকার যদি জনস্বার্থে নিজ দরকার বলে মনে করেন অথবা এটি পরিত্যক্ত সম্পত্তি থেকে অবমুক্ত করে দেওয়া হয় তা হলে যথারীতি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বাড়িটি খালি করে দিতে হবে। সরকার উক্ত বরাদ্দকৃত এবং উক্তরূপ খালি হওয়া বাড়ির পরিবর্তে অন্য কোনো বাড়ি বরাদ্দ দিতে বাধ্য থাকবেন না।
এই বাড়ি সংক্রান্ত যাবতীয় স্থাবর অস্থাবর মালামালের তিন কপি তালিকা ম্যাজিষ্ট্রেট/গণপূর্ত রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মারফত প্রস্তুত করতে হবে এবং দখল গ্রহণ ও দখল হস্তান্তরের সময় এক কপি বিস্তারিত রিপোর্টসহ অত্র বোর্ডে পাঠাতে হবে। তার প্রয়োজনে বাড়ি খালি করার সময় অত্র বোর্ডকে আগেই অবহিত করতে হবে।
বরাদ্দকৃত বাড়ির দখল ১০ দিনের মধ্যে বা উক্ত বাড়ি বে-দখলে থাকলে খালি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এটির দখল তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, গণপূর্ত রক্ষণাবেক্ষণ সার্কেল, ঢাকার অফিস থেকে নিতে হবে।
শর্তে আরও বলা হয়, যদি জানা যায় যে বাংলাদেশের যে কোন শহর অঞ্চলে বরাদ্দ প্রাপকের নিজের বা নির্ভরশীল ছেলে মেয়েদের নামে কোন বাড়ি আছে তা হলে এই বরাদ্দপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে এবং বিনা নোটিশে তিনি বাড়ি ছেড়ে দিতে বাধ্য থাকবেন। এই বরাদ্দপত্র প্রাপ্তির সাত দিনের মধ্যে এই মর্মে সত্যায়িত ছবি সম্বলিত একটি হলফনামা সম্পাদন করে তা এ বোর্ডে দাখিল করতে হবে।