নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : মাইক্রো-মোটরসাইকেলে চলছে ঢাকায় আসা-যাওয়া। মোটরসাইকেল ও মাইক্রোবাসে ঢাকা থেকে অনেক যাত্রীই কুমিল্লা, চাঁদপুর ও চট্টগ্রামে যাচ্ছেন। মোটরসাইকেল বা মাইক্রোবাসে একইভাবে কুমিল্লা ও এর আশপাশের এলাকা থেকে ঢাকায় ঢুকছেন তাঁরা। যাত্রীরা বলছেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন স্বজনের সেবা করতে অথবা জরুরি প্রয়োজনে তাঁরা এভাবে ঢাকায় ঢুকছেন এবং ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছেন।
কুমিল্লার সাইফুর রহমানের মা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন। আগামী সোমবার থেকে দেশে কঠোর লকডাউন। তাই আজ শনিবার সকালেই মায়ের দেখভাল করার জন্য কুমিল্লা থেকে রওনা দেন তিনি। সাইফুর রহমান বলেন, অন্য সময় কুমিল্লা থেকে ঢাকায় আসতে ১০০ থেকে ১৫০ টাকার প্রয়োজন পড়ত। মাইক্রোবাসে আসতে খরচ পড়েছে ৭০০ টাকা। জানালেন, তাঁর সহযাত্রী ছিলেন চালকসহ মোট ১৪ জন। পথে দুবার পুলিশ আটকায়। সাইফুর জানান, এ সময় তিনি চালককে পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে দেখেন। পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে সাইফুরের মতো অনেককে এভাবে ঢাকায় ঢুকতে ও ঢাকা ছাড়তে দেখা গেছে। যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভারের নিচে ও যাত্রাবাড়ী থানার পাশে অবস্থান করে দেখা যায়, অনেকেই মাইক্রোবাসে ঢাকায় ঢুকছেন। থানার পাশ থেকে অনেকে সরাসরি মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলে করে ঢাকা থেকে কুমিল্লা যাচ্ছেন।
গত মঙ্গলবার থেকে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় ঢাকাকে সারা দেশ থেকে নয় দিনের জন্য বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ জন্য আশপাশের কয়েকটি জেলাসহ দেশের মোট সাতটি জেলায় সার্বিক কার্যাবলি ও চলাচল (জনসাধারণের চলাচলসহ) ৩০ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া সারা দেশে দূরপাল্লার বাস ও সকল রেলসেবা বন্ধ রয়েছে।
যাত্রাবাড়ী ও সায়েদাবাদে যাত্রী, চালক ও সহকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কুমিল্লা থেকে মেঘনা ব্রিজ পর্যন্ত সিএনজিচালিত অটোরিকশায় এসে ঢাকার লোকাল বাসে করে রাজধানীতে ঢুকতে হচ্ছে। একইভাবে ঢাকা থেকেও যেতে হচ্ছে যাত্রীদের।
সোমবার থেকে কঠোর লকডাউন শুরু হওয়ার আগেই নাসিমুল ইসলাম গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রাম ফিরতে চান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী তাই সকালে এসেছিলেন যাত্রাবাড়ীতে। এসে জানতে পারেন, মাইক্রোবাসে চট্টগ্রাম ফেরার ব্যবস্থা আছে। তবে সরাসরি চট্টগ্রাম পর্যন্ত মাইক্রোবাস পাওয়া যাচ্ছে না। প্রথমে কুমিল্লা পর্যন্ত যেতে হবে, তারপর আবার কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
নাসিমুল ইসলাম বলেন, কুমিল্লা পর্যন্ত সবার কাছে ৬০০ টাকা করে নিচ্ছে। আর কুমিল্লা থেকে গাড়ি পরিবর্তন করে চট্টগ্রাম যাওয়া যাবে। এতে আরও ২০০ থেকে ৩০০ টাকা খরচ হতে পারে।
ঢাকা থেকে কুমিল্লায় অনেককেই মোটরসাইকেল ভাড়া করেও যেতে দেখা গিয়েছে। বিশেষ করে যাঁরা চাঁদপুর দিকে যাচ্ছিলেন, তাঁরা মোটরসাইকেলে প্রথমে কুমিল্লায় যান। আর এতে খরচ পড়ে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা।