নয়াবার্তা প্রতিবেদক : সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চের বিচারপতিদের ‘মাই লর্ড’ বা ‘লর্ডশিপ’ সম্বোধনের স্থলে ‘ইওর অনার’ অথবা ‘স্যার’ সম্বোধন করার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে বিচারপতি শেখ জাকির হোসেন ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এমন নির্দেশ প্রদান করেন।
সকালে একটি মামলার শুনানীর সময় আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি শেখ জাকির হোসেন বলেন, দাসত্বের সময় নেই, প্রভুরা চলে গেছে। অতএব ‘ইওর অনার’ অথবা ‘স্যার’ সম্বোধন করবেন। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ অফিসারকে কোর্ট কক্ষের বাইরে এ সংক্রান্ত নোটিশ টানাতে নির্দেশ দেন। দুপুর থেকেই বিজয়-৭১ ভবনের ১৭ নম্বর কোর্টের বেঞ্চের দরজায় বিচারপতিদের মাইলর্ড সম্মোধন না করতে বিশেষ বিজ্ঞপ্তি সাটিয়ে দেওয়া হয়।
ওই বেঞ্চের বেঞ্চ অফিসার মনির হোসেন এ আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এ নির্দেশ শুধু মাত্র আমাদের এই বেঞ্চের জন্য প্রযোজ্য, অন্য কোন বেঞ্চের জন্য নয়।
বিশেষ বিজ্ঞপ্তি বলা হয়েছে, অত্র বেঞ্চে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিজ্ঞ আইনজীবীদের ‘মাই লর্ড’ এর স্থলে ‘ইউর অনার’ অথবা ‘স্যার’ সম্মোধন করার নির্দেশ প্রদান করা হইল।
যোগাযোগ করা হলে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান জানান, এ নির্দেশনার কথা জেনেছেন। সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের সম্বোধনের কোনো নিয়ম আছে কি না, সে বিষয়ে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে কিছু বলতে পারেননি।
হাইকোর্টের একটি সূত্র জানিয়েছেন, ব্রিটিশ শাসনামল থেকে আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের সম্বোধন করতে ‘মাই লর্ড’ ব্যবহার করে আসছেন। কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোতে এমনই হয়ে থাকে। আপিল বিভাগ বা হাইকোর্ট বিভাগের বিধিমালায় বিচারকদের ‘মাই লর্ড’ সম্বোধনের কোনো বিধান নেই বলে সূত্র জানায়।
জানা যায়, ১৯৮২ সালে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ফজলে কাদেরী মোহাম্মদ আবদুল মুনিম ৪ অক্টোবর একটি নোটিশ জারি করে ‘মাই লর্ড শব্দ ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছিলেন। কিন্তু সেই বিজ্ঞপ্তি এখন মানা হয় না।
হাইকোর্টের জন্য মোট ৫৩টি বেঞ্চ আছে। বেশিরভাগ ডিভিশন (দুই বিচারক) বেঞ্চ এবং আপিল বিভাগের ৩টি বেঞ্চে আদালতের কার্যক্রম চলাকালে বিচারকদের ‘মাই লর্ড’ বলে সম্বোধন করা হয়।
