মুরগি-ডিমের দাম কমেনি, বেড়েছে মরিচের

নিজস্ব প্রতিবেদক : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে মঙ্গলবার রাত থেকে সারা দেশে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। এর প্রভাব পড়েছে নিত্যসামগ্রীর বাজারে। বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম; আগের চেয়ে মরিচের দাম কেজিতে সর্বোচ্চ ৪০ টাকা বেড়েছে। বেড়েছে আদার দামও। বিভিন্ন প্রকার সবজি, পেঁয়াজ ও চালের দাম অপরিবর্তিত আছে।

অন্যদিকে আগের সপ্তাহের তুলনায় বাজারে ব্রয়লার মুরগি ও ফার্মের মুরগির ডিমের দাম কমেনি। তবে সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা কমেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেওড়াপাড়া, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ও টাউন হল কাঁচাবাজার ঘুরে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

কয়েক দিন ধরে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছিল ১৬০ থেকে ২০০ টাকা। গত তিন দিনে মরিচের দাম কেজিতে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এতে প্রতি কেজি মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৪০ টাকায়। পাড়া-মহল্লায় এ দাম আরও বেশি রাখা হচ্ছে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, মূলত ভারত থেকে মরিচের আমদানি কমেছে। আবার বৃষ্টির কারণে দেশীয় মরিচের সরবরাহও কম। এ দুই কারণে মরিচের দাম বেড়েছে।

গত সপ্তাহে আদার কেজি ছিল ২২০-২৪০ টাকা, যা গতকাল ২৪০-২৮০ টাকায় বিক্রি হয়। কেজিতে ২০-৪০ টাকা বেড়েছে। তবে বাজারে নতুন আদা (কাঁচা আদা) আসতে শুরু করেছে, যদিও এ ধরনের আদা বেশি সময় ভালো থাকে না। বাজারভেদে নতুন আদা ১৫০-২০০ টাকা কেজি পাওয়া যায়। এ ছাড়া ধনেপাতার দাম খুচরা পর্যায়ে কেজিতে ১০০ টাকা বেড়ে ৪০০-৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মুরগি-ডিমের দাম কমেনি : বাজারে ব্রয়লার মুরগি ও ফার্মের মুরগির ডিমের দাম আগের সপ্তাহের তুলনায় কমেনি। এ দাম সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে কিছুটা বেশি। গতকাল বাজারভেদে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮৫-১৯০ টাকায় বিক্রি হয়। আর ফার্মের মুরগির প্রতি ডজন বাদামি ডিম ১৬০-১৬৫ টাকা ও সাদা ডিম ১৫৫-১৬০ টাকায় বিক্রি হয়। তবে সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ১০-২০ টাকা কমেছে। প্রতি কেজি সোনালি মুরগি গতকাল ২৬০-২৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর হাইব্রিড ধরনের সোনালি মুরগি কেজিতে আরও ২০ টাকা কমে পাওয়া যায়।

সম্প্রতি ডিম এবং ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির ‘যৌক্তিক দাম’ নির্ধারণ করে দেয় সরকারি সংস্থা কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। এতে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি সর্বোচ্চ ১৮০ টাকা, সোনালি মুরগি সর্বোচ্চ ২৭০ টাকা ও ডিমের দাম সর্বোচ্চ ১৪২ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

সাধারণ সময়ের চেয়ে চিংড়ি, পাঙাশ ও রুই মাছ কেজিতে ৩০-৫০ টাকা বেশি বিক্রি হচ্ছে। এই দাম গত সপ্তাহেই বেড়েছিল, এরপর সেভাবে কমেনি। আর ইলিশ মাছের দোকানে ভিড় বেশি থাকলেও বিক্রি কম।

সবজি ও চালের দাম অপরিবর্তিত : আগের তুলনায় বাজারে কোনো ধরনের সবজির দাম কমেনি। গতকাল খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি বেগুন ও বরবটি ৮০-১২০ টাকা এবং করলা, ঝিঙে, চিচিঙ্গা, ধুন্দুল, ঢ্যাঁড়স, কচুমুখি, শসা প্রভৃতি ৬০-৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এসব সবজির দাম তিন-চার সপ্তাহ ধরেই এ দামে রয়েছে।

অন্যদিকে আলু, পেঁয়াজ ও রসুনের দাম আগের মতোই আছে। বাজারে প্রতি কেজি আলু ৫৫-৬০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ১১০-১১৫ টাকা, আমদানি করা পেঁয়াজ ৯০-১১০ টাকা ও রসুন ২২০-২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক মাস আগে চালের দাম কেজিতে ৪-৬ টাকা বেড়েছিল। সেই দাম এখনো অপরিবর্তিত আছে।

সাধারণ সময়ের চেয়ে চিংড়ি, পাঙাশ ও রুই মাছ কেজিতে ৩০-৫০ টাকা বেশি বিক্রি হচ্ছে। এই দাম গত সপ্তাহেই বেড়েছিল, এরপর সেভাবে কমেনি। আর ইলিশ মাছের দোকানে ভিড় বেশি থাকলেও বিক্রি কম।

শেওড়াপাড়া বাজার থেকে গতকাল সকালে সবজি, ডিম ও ব্রয়লার মুরগি কেনেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী এমদাদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘সরকার দাম কমাতে কোনো উদ্যোগ নিয়েছে কি না জানি না। কিন্তু এভাবে বাড়তি দামে জিনিসপত্র কিনতে গিয়ে আমাদের কষ্টের শেষ নেই।’

Share