রিজার্ভ চুরি : ফিলিপাইনের ব্যাংকার মায়া দেগুইতোরের সাজা বহাল

নয়াবার্তা ডেস্ক : বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ পাচারের অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত ফিলিপাইনের রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংক করপোরেশনের (আরসিবিসি) সাবেক ব্যবস্থাপক মায়া দেগুইতোর সাজা বাতিলের আপিল আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। গতকাল বুধবার ফিলিপাইনের সংবাদমাধ্যম এবিএস-সিবিএন এ তথ্য জানিয়েছে।

আপিলে মায়া সান্তোস বলেছিলেন, বিচারিক আদালত তাকে যে শাস্তি দিয়েছিলেন, সেই রায় দেওয়া হয়েছিল তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগের বিষয়ে ভুল বোঝাবুঝি থেকে। এ ছাড়া সে লেনদেন অবৈধ জেনেও তিনি হতে দিয়েছেন, এই কথা ‘অনুমান’ প্রসূত বলেও আপিল আবেদনে উল্লেখ করেছিলেন মায়া।

কিন্তু ফিলিপাইনের আপিল আদালত মায়া সান্তোসের দাবি খারিজ করে বলেন, মায়া সান্তোস আরসিবিসির নিছক কর্মী ছিলেন না। তিনি যে হিসাব খুলেছিলেন, তার কারণেই পুরো বিষয়টি সম্ভব হয়েছিল।

বিচারিক আদালতের রায়ে বলা হয়েছিল, মায়া দেগুইতো এই অবৈধ ব্যাংক লেনদেন সহজে বাস্তবায়ন ও সমন্বয়ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ফিলিপাইনের আদালত সাবেক ওই ব্যাংক ব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের আটটি অভিযোগের সবকটিতে দোষী সাব্যস্ত করেন। এবার আপিল আদালতও তা বহাল রাখলেন।

আটটি অভিযোগের প্রতিটিতে তাকে চার থেকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে তাকে ১০ কোটি ৯০ লাখ ডলার জরিমানাও করা হয়।

২০১৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের সুইফট পেমেন্ট সিস্টেমে ঢুকে সাইবার অপরাধীরা নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি করে। এর মধ্যে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চলে যায় ফিলিপাইনে।পরে ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংকের মাকাতি শাখার মাধ্যমে তা ক্যাসিনো ও বিভিন্ন ব্যক্তির হাতে চলে যায়। অর্থ পাচারের এ ঘটনায় আরসিবিসির মাকাতি শাখার ব্যবস্থাপক হিসেবে সরাসরি জড়িত ছিলেন মায়া সান্তোস দেগুইতো। এ ঘটনায় দেগুইতোর বিরুদ্ধে আটটি অভিযোগ আনা হয় এবং ২০১৯ সালে ফিলিপাইনের একটি আদালত প্রতিটি অভিযোগে তাকে ৪ থেকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেয়।

এ ছাড়া ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে চুরি হওয়া অর্থের বড় অংশটি ফিলিপাইন গেলেও বাকি দুই কোটি ডলার যায় শ্রীলঙ্কায়।

পরে শ্রীলঙ্কা থেকে দুই কোটি ডলার উদ্ধার করতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে ফিলিপাইনে চলে যাওয়া অর্থের বেশির ভাগ এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

Share