শিল্পপতির কন্যাদের রিটার্ন জমায় ‘বিশেষ’ সুবিধা দেয়ায় অতিরিক্ত সহকারী কর কমিশনার বরখাস্ত

নয়াবার্তা প্রতিবেদক : জালিয়াতি ও কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগে খুলনার কর আপিল অঞ্চলের অতিরিক্ত সহকারী কর কমিশনার মো. সামসুদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

রোববার (১৬ জুলাই) এনবিআরের কর প্রশাসন ও মানব সম্পদ বিভাগের সদস্য সৈয়দ মোহাম্মদ আবু দাউদের সই করা প্রজ্ঞাপন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। তাকে সরকারি চাকরি আইন-২০১৮ এর ৩৯ (১) এর ধারা অনুযায়ী চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানা যায়, অতিরিক্ত সহকারী কর কমিশনার মো. সামসুদ্দিন কর অঞ্চল-১২ এ কর্মরত থাকাকালে দুই শিল্পপতির মেয়েকে রিটার্ন জমার ক্ষেত্রে ‘বিশেষ’ সুবিধা দিয়েছেন। এক করদাতার রিটার্নে কোটি টাকা সম্পদ থাকা সত্ত্বেও মাত্র ৩ হাজার ও ৬ হাজার ৬০০ টাকা কর দেখানো হয়। সম্পদের ওপর সারচার্জ আদায়ের বাধ্যবাধকতা থাকলেও সেটি আদায় করেননি ওই কর্মকর্তা।

এনবিআরের সিআইসির তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে কর অঞ্চল-১২ দুই করদাতার আয়কর নির্ধারণ করে। এরপর ডিভাইন গ্রুপের পরিচালক সামায়া হাসানকে ৪ কোটি ৮ লাখ এবং তানজিলা গ্রুপের পরিচালক তানজিলা মুনির অর্চিকে ১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা পরিশোধের নোটিশ দেওয়া হয়। সেই নোটিশে সংক্ষুব্ধ হয়ে করদাতা সামায়া হাসান কর আপিলে আপিল করেন। আপিলে কাগজপত্র পর্যালোচনা করে আপিলাত ট্রাইব্যুনাল আয়কর পরিশোধ থেকে তাদের দায়মুক্তি দেন। পরে সামায়া হাসান ফাঁকির দায় স্বীকার করে ১ কোটি টাকা কর পরিশোধ করেছেন। আর তানজিলা মুনির অর্চির কাছ থেকে কর আদায়ে সার্টিফিকেট মামলা করা হয়। এ বিষয়ে একাধিক শুনানি হয়েছে।

সিআইসির তদন্তে দেখা যায়, করদাতার কাছ থেকে লাভবান হতে ট্যাক্সেস আপিলাত ট্রাইব্যুনালে জাল নথিপত্র দাখিল করে রাষ্ট্রের ৪ কোটি ৮ লাখ টাকার ক্ষতি করেছেন, যা স্পষ্টতই তার পেশাগত অসদাচরণ। সামসুদ্দিনের বিরুদ্ধে দায়ের করা বিভাগীয় মামলায় গাফিলতি ও কর্তব্যে অবহেলারও প্রমাণ পাওয়া গেছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে করদাতা হয়রানিসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে।

Share