কুড়িগ্রামে বন্যায় পানিবন্দি ৬০ হাজার মানুষ

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি কমলেও ভোগান্তি কমেনি বানভাসিদের। বন্যাকবলিত এলাকাগুলোর রাস্তা-ঘাট, ঘর-বাড়ি এখনো প্লাবিত থাকায় দুর্ভোগকে সঙ্গী করে বেঁচে আসে বন্যা কবলিতরা। নদ-নদী অববাহিকার চর-দ্বীপগুলোর নিম্নাঞ্চলে বন্যার পানিতে মাঠের ফসল তলিয়ে থাকায় শঙ্কায় রয়েছে কৃষক।

কুড়িগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্র জানায়, চলতি বন্যায় ৪৫টি ইউনিয়নের ১৮৫টি গ্রাম সম্পূর্ণ বা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে বন্যা কবলিত হয়েছে ৬১ হাজার ৪৫জন মানুষ। জেলার ৩৬১টি আশ্রয়কেন্দ্রের মধ্যে ২১টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১৮০টি পরিবারের ৩শ’জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। এখন পর্যন্ত ২২ হাজার পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

শনিবার বিকালে দুধকুমার নদীর পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে ৪ সেমি ও ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ২১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার শামসুল আলম বলেন, বন্যার কারণে ১১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ২৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্লাবিত হওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।

কুড়িগ্রাম জেলা মৎস কর্মকর্তা কালিপদ রায় বলেন, বন্যায় এখন পর্যন্ত ৬৫০টি পুকুরের ১৩০ টন মাছ ভেসে গেছে।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, বন্যার কারণে মাঠে অবস্থিত ফসলের মধ্যে ১ হাজার ৪৮৭ হেক্টর ফসল নিমজ্জিত হয়েছে। এরমধ্যে শাকসবজি ২৬২ হেক্টর, আউস ধান ২৪৪ হেক্টর, বীজতলা ৩৮০ হেক্টর, কলা ২০ হেক্টর এবং পাট ৫৮১ হেক্টর। শাকসবজি পুরোটাই নষ্ট হয়ে গেছে। পানি নেমে গেলে বাকি ফসলের ততটা ক্ষতি হবে না।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, এখন পর্যন্ত বন্যার্তদের জন্য ৩৬৩ মেট্রিক টন চাল, সাড়ে ৮ লাখ টাকা ও ২২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ১০ মেট্রিক টন চাল, ১০ লাখ টাকা ও ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার অতিরিক্ত বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এর পাশাপাশি জেলা ও উপজেলা প্রশাসনে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।

Share