শ্যালকের কাছে প্রবাসী দুলা ভাই পাঠালেন নগ্ন ছবি, লজ্জায় স্ত্রীর আত্মহত্যা!

নিজস্ব জেলা প্রতিবেদক : কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে স্ত্রী রুজিনা আক্তারের নগ্ম ছবি ভাইরালের হুমকি দেন দুবাই প্রবাসী স্বামী মনু মিয়া। এতে লোকলজ্জায় স্ত্রী রুজিনা আক্তার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেছেন তার মা ও ভাই। গতকাল মঙ্গলবার রাতে উপজেলার মৌকরা ইউপির ময়ূরা মাধ্যম পাড়া গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে।

নিহত রুজিনার মারিয়া আক্তার নামে ৭ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। গত ৮-৯ বছর আগে প্রথম স্বামীর সংসার থেকে বিচ্ছেদ হয় রুজিনার। এরপর গত দেড় বছর আগে প্রবাসী বেতাগাও গ্রামের মনু মিয়ার সঙ্গে মৌকরা ইউপির ময়ূরা মাধ্যম পাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল মালেকের মেয়ে রুজিনা বেগমের বিয়ে হয়। গত ৬ মাস আগে রুজিনার স্বামী দুবাই চলে যান। পরে তিনি জানতে পারেন, তার স্ত্রীর সঙ্গে অন্য পুরুষের সম্পর্ক রয়েছে। তাই রুজিনার নগ্ম ছবি, রুজিনার ছোট ভাই কলেজ পড়ুয়া রাকিব হাসানের মোবাইল পাঠাতে থাকেন প্রবাসী স্বামী মনু মিয়া। এ ছাড়া সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। এতে করে স্বামী-স্ত্রী মধ্যে বিরোধ চলছিল।

নিহতের ছোট ভাই রাকিব হাসান বলেন, ‘আপুর আগে একটি বিয়ে হয়েছে। ওই ঘরে মারিয়া আক্তার নামের তার একটি ভাগ্মি রয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে মা, আপু ও ভাগ্নিসহ রাতের খাবার পেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। একই ঘরের একটি কক্ষে আমি থাকি। অন্য কক্ষে আপু ও তার মেয়ে থাকেন। রাত আনুমানিক ৩টার পর আপুর ছোট মেয়ে মারিয়া এসে বলেন, “মামা আমি বাহিরে যাবো।” তখন বলি তোমার আম্মুকে বলো। এ সময় তার কক্ষে গিয়ে দেখি আপু ওড়না দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘রাতে আপু আর দুলাভাইয়ের মোবাইলে ঝগড়া করতে শুনেছি। বিভিন্ন সময় দুলাভাই আপুর নগ্ম ছবি তার মোবাইল পাঠাতো।‘

নিহতের মা মমেনা বেগম বলেন, ‘প্রবাসী স্বামী তার মেয়ের নগ্ম ছবি বিভিন্ন লোকের কাছে পাঠাতো। স্বামী স্ত্রীর নগ্ম ছবি ভাইরাল করারও হুমকি দিয়ে আসছিলেন। এতে লোক লজ্জায় মেয়ে আত্মহত্যা করেছেন।’

এ বিষয়ে নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল নূর জানান, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে আত্মহত্যা প্ররোচণার মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

Share