নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : আ হ ম মুস্তফা কামাল । ফাইল ছবিআ হ ম মুস্তফা কামাল । ফাইল ছবিদেশের পুঁজিবাজার সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেই। ব্যাংক খাতের অবস্থাও নাজুক। আজ রোববার সংসদে এ কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
এ সংক্রান্ত দুটি সম্পূরক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, পুঁজিবাজারের সমস্যা চিহ্নিত করা হয়েছে। এটি সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া হবে। আগামী বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য প্রণোদনা থাকবে।
জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদের প্রশ্নের জবাবে মুস্তফা কামাল বলেন, কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংক দেউলিয়া হোক, সরকার তা চায় না। যুক্তরাষ্ট্রের উদাহরণ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘ব্যাংক বাঁচাতে যে পরিমাণ সহযোগিতা করা দরকার, সরকার তা করবে। ফারমার্স ব্যাংক ব্যর্থ হয়েছে বলে যে এর উত্তরসূরি পদ্মা ব্যাংকও ব্যর্থ হবে, তেমন নয়। আমরা আশা করি, পদ্মা ব্যাংক ঘুরে দাঁড়াবে। যারা ফারমার্স ব্যাংকে টাকা রেখেছিলেন, তাঁরা অবশ্যই সে টাকা ফেরত পাবেন। পদ্মা ব্যাংক সে টাকা ফেরত দিতে বাধ্য।’
শহীদুজ্জামানের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, সুদের হার এ মুহূর্তে সবার দুশ্চিন্তার জায়গা। প্রধানমন্ত্রী সুদের হার নিয়ে যে নির্দেশনা দিয়েছেন, সে অনুযায়ী ব্যাংক ঋণের সুদের হার এক অঙ্কে নামিয়ে আনা হবে। এ বছরই এর সুফল দেখা যাবে। যেভাবে ঋণের সুদ নির্ধারণ করা হয় তাতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। সরল সুদের ওপর কমপাউন্ডিং সুদ নেওয়া যাবে না। আগামী ১ জুলাই থেকে এটা কার্যকর করা হবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, সাবেক অর্থমন্ত্রী একটি ব্যাংক কমিশন গঠন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। অতীতে অনেক বিষয়ে অনেক কমিটি হয়েছে। তবে সুরাহা হয়নি। মন্ত্রীর মতে, ব্যাংক কমিশন গঠন করার প্রয়োজন হবে না।
গণফোরাম থেকে নির্বাচিত সাংসদ মোকাব্বির খানের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, পুরো বিশ্বেই ঋণখেলাপিদের ছাড় দেওয়ার নজির আছে। ঋণখেলাপিদের ছাড় না দিলে দেশের অর্থনীতি চলবে না। আবার সবাইকে ছাড়ও দেওয়া যাবে না।
আহসানুল ইসলাম টিটোর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, কোনো দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী হওয়ার প্রথম প্রতিফলন পুঁজিবাজার দেখা যায়। সারা পৃথিবীতে পুঁজিবাজার ও অর্থনীতি এভাবে সম্পৃক্ত থাকে। আমাদের দেশের অর্থনীতি অত্যন্ত চাঙা। অত্যন্ত শক্তিশালী। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক ও আইএমএফ আমাদের অর্থনীতি দেখে উচ্ছ্বসিত। তারা অন্যান্য দেশগুলোকে বাংলাদেশকে অনুসরণ করতে বলেছে।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এই এগিয়ে যাওয়া থমকে যাবে যদি পুঁজিবাজারকে নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারি। পুঁজিবাজার এখন নিয়ন্ত্রণে নেই। তবে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নেই সেটাও বলব না। পুঁজিবাজারের যেসব সমস্যা আছে তা চিহ্নিত করেছি। একে একে সবগুলি সমস্যার সমাধান দেব। পুঁজিবাজারের সঙ্গে সম্পৃক্তদের নিয়ে আমি নিজেও এক-দুই দফা মিটিং করেছি। আরও মিটিং করব। মিটিং করে আর দশটি দেশের পুঁজিবাজার যেভাবে চলে সেভাবে চালানোর চেষ্টা করব। যেসব জায়গায় বিচ্যুতি আছে তা অবশ্যই দূর করা হবে।’
এ কে এম রহমতুল্লাহর প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যবসায়ী পর্যায়ে ভ্যাট ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা আছে। এই প্রবণতা রোধে আইন সংশোধন করা হয়েছে। এই আইন এ বছরের ১ জুলাই থেকে বাস্তবায়নের পরিকল্পনা আছে।