নিজস্ব জেলা প্রতিবেদক : করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে ও উপসর্গ নিয়ে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং সদর হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ২৮ বছর বয়সী চার মাসের এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূও আছেন। তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে সাতটায় মারা যান। তাঁকে গতকাল বুধবার রাত দুইটার দিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদিকে গতকাল সকাল আটটা থেকে আজ সকাল আটটা পর্যন্ত জেলার ৯৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৪৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৫০ দশমিক ৫২ শতাংশ। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ১৮২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১০৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ছিল ৫৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জনের দপ্তর সূত্রে জানা যায়, করোনা উপসর্গ নিয়ে গতকাল থেকে আজ সকাল আটটা পর্যন্ত সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চারজনের মৃত্যু হয়। তাঁরা হলেন সদর উপজেলার গয়েশপুর গ্রামের রুহুল কদ্দুস (৫৫), পরানদাহ গ্রামের রূপবান বিবি (৫৫), আমতলা গ্রামের রিজিয়া খাতুন (৩৫) ও সাতক্ষীরা শহরেরর মুন্সিপাড়া এলাকার কামরুজ্জামান (৬৪)। এ ছাড়া করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে কলারোয়া উপজেলার চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা বিলকিস খাতুনের (২৮) মৃত্যু হয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলায় এ পর্যন্ত করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন ২ হাজার ১৪৫ জন। এ পর্যন্ত জেলায় করোনা উপসর্গ নিয়ে ২৩৯ জন এবং করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়ে ৪৯ জন মারা গেছেন।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক কুদরত-ই-খোদা জানান, রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। হাসপাতালের ১২০ শয্যা করোনা ইউনিটের বতর্মানে ১২০ রোগী ভর্তি রয়েছে। শয্যাসংখ্যা গতকাল বাড়িয়ে ১৩৫ করা হয়েছে।
সিভিল সার্জন হুসাইন সাফায়াত জানান, ১০০ শয্যার সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালকে করোনা বিশেষায়িত হাসাপাতাল করার কাজ চলছে।
সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, লকডাউন সঠিকভাবে মেনে চলতে সাতক্ষীরা শহরসহ উপজেলা শহরেও অসংখ্য ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। পুলিশের পাহারাচৌকি বাসানো হয়েছে। তারপরও মানুষ সচেতন হচ্ছে না।
জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল জানান, লকডাউন মানতে সামাজিক দুরত্ব মেনে চলতে ও মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে জেলায় প্রতিদিন একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালাচ্ছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ৯টি ভ্রাম্যামাণ আদালতের অভিযানে ৫০টি মামলায় ৩২ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।