সিঙ্গাপুরে বউ ভাগাভাগির শাস্তি ২৯ বছরের জেল, ২৪ ঘা বেত্রাঘাত

নয়াবার্তা ডেস্ক : আট বছর ধরে অন্যদের সঙ্গে বউ ভাগাভাগি করার দায় স্বীকার করে নেয়ায় সিঙ্গাপুরে ৪২ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে ২৯ বছরের জেল দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ২৪ ঘা বেত্রাঘাত মারার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি চার সন্তানের পিতা। অনলাইন স্ট্রেইটস টাইমস তাকে ইংরেজি শুধু ‘জে’ অক্ষর দিয়ে প্রকাশ করেছে। সে আদালতে স্বীকার করেছে নিজের স্ত্রীকে চেতনানাশক সেবন করাতো। এরপর আট বছর ধরে অন্য ৫ পুরুষকে স্ত্রীর ভাগ দিতো। তার চোখের সামনে ওইসব পুরুষ তার স্ত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতো। বিনিময়ে ওইসব ব্যক্তির মধ্যে দু’জনের স্ত্রীকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে ‘জে’। এসব শারীরিক সম্পর্কের সময় তারা কোনো রকম নিরাপত্তামুলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতো না। উল্টো এ সময়ের ফটো তুলতো এবং ভিডিও ধারণ করতো।

এই সম্পর্কের মূলে রয়েছে ‘জে’। এমন পর্যবেক্ষণ দিয়েছে আদালত। এ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে মামলা চলছে। এরই মধ্যে সাত জন পুরুষকে আদালতে তোলা হয়। তার মধ্যে ‘জে’ ছিল একজন নিরাপত্তাকর্মী। তার বিরুদ্ধেই আনা হয়েছে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক অভিযোগ। বৃহস্পতিবার মামলার রায়ের সময় সে ৬টি অভিযোগের দায় স্বীকার করেছে। তার বিরুদ্ধে আরও ১১ টি অভিযোগ বিবেচনা করা হচ্ছে।
‘জে’কে শাস্তি দেয়ার ঘোষণার সময় বিচারক সি কি ওন বলেন, এই ঘটনায় বৈবাহিক সম্পর্কে যে আস্থা থাকে তার প্রতি প্রচণ্ডরকম বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে। ব্যাপকভাবে যৌনতার নিয়ম লংঘন করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, কৃতকর্মের জন্য অকপটভাবে অনুতাপ প্রকাশ করেছে ‘জে’। সে পরিষ্কার হতে চায় এবং কৃতকর্মের শাস্তি পেতে চায়। তবে সে যে অন্যায় করেছে, তাতে যে অনুশোচনাই করুক না কেন তা তার কৃতকর্মের জন্য শাস্তিকে কমিয়ে দিতে পারে না। এখানে উল্লেখ্য, কোনো রকম আইনজীবী প্রতিনিধিত্ব করেননি ‘জে’র পক্ষে। সে দায় স্বীকার করে বলেছে, তার স্ত্রী অবিশ্বাসী ছিলেন। এ জন্য প্রতিশোধ নিতে এ কাজ করেছে ‘জে’। এ অবস্থায় আদালতে দেয়া বিবৃতিতে ‘জে’ বলেছে, দায় স্বীকার করে নিচ্ছেন এবং শাস্তি মেনে নেবে। ‘তবে ঠিক এই মুহূর্তে আমার সন্তানদের ও স্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে আমার উদ্বেগ’।

ওদিকে মানসিক রোগ বিশষজ্ঞদের দেখানোর রিপোর্ট আদালতে জমা দিয়েছে ‘জে’। তাতে সে বলেছে, যৌনতার প্রতি তার আসক্তি ছিল। তবে তার সেই রিপোর্ট গ্রহণ করেনি আদালত। এই মামলায় ৭ জন পুরুষের মধ্যে ৫ জনকে তিন থেকে ২২ বছর পর্যন্ত জেল দেয়া হয়েছে। তিনজনকে ২০ ঘা করে বেত্রাঘাত দেয়ার রায় দিয়েছেন আদালত। এই মামলায় অন্য তিনজন ‘কে’ (৪৫), ‘এল’ (৫৪) ও ‘এম’র (৪৫) বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে যে, তারা তাদের নারী পার্টনারকে অন্য পুরুষের কাছে তুলে দিয়েছিল। এরপর ওই নারীদের ধর্ষণের দৃশ্য দেখতো তারা। এসব নারীকে তাদের অজ্ঞাতে দেয়া হতো চেতনানাশক।

২০১০ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত নিজের স্ত্রীকে ধর্ষণে ‘এন’, এবং ‘ও’ নামের দু’জন পুরুষকে ধর্ষণের সুযোগ করে দিয়েছে ‘জে’। এখানেই শেষ নয়, সে ২০১২ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে তিনবার ধর্ষণ করেছে ‘কে’র স্ত্রীকে। ২০১৮ সালে ধর্ষণ করেছে ‘এম’-এর স্ত্রীকে। ওদিকে ‘এল’-এর স্ত্রীকে তার সহকর্মী ‘পি’ ২০১৭ সালে ধর্ষণের আগে অচেতন হয়ে পড়েন। তদন্তে দেখা যাচ্ছে অনলাইন ফোরাম ‘স্যামিবয়’ এবং অন্যান্য প্লাটফরর্মের মাধ্যমে এসব পুরুষ একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে। তাদের মধ্যে পার্টনার এবং স্ত্রীদের ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা হয়। প্রাইভেট এবং গ্রুপ চ্যাটে তারা স্ত্রী ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় তারা একে অন্যের সঙ্গে যৌনজীবন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে। স্ত্রী ও পার্টনারদের রগরগে ছবি, ভিডিও শেয়ার করে। নিজের স্ত্রীদের সঙ্গে অন্য বন্ধুরা শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনকালে তা গোপনে সরাসরি সম্প্রচার করে ‘জে’ এবং ‘কে’।

Share