নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : টেকনাফে চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান নিহত হওয়ার ঘটনায় তার বোনের করা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার সাত আসামিকে (চার পুলিশ সদস্য ও পুলিশের দায়ের করা মামলার তিন সাক্ষী) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কারাগার থেকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে গেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে র্যাবের একটি গাড়িতে করে কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়।
তারা হলেন- কনস্টেবল সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া, টেকনাফের মারিশবুনিয়া গ্রামের মো. আইয়াস, নুরুল আমিন ও নাজিম উদ্দিন। তাদের মধ্যে শেষের তিন জন পুলিশের করা মামলার সাক্ষী।
জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক (জেল সুপার) মোকাম্মেল হোসেন জানান, সকাল ১০টার দিকে ওই সাত জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কারাগার থেকে নিয়ে যায় র্যাব।
মামলার অন্য তিন আসামি টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলি ও সাময়িক বরখাস্তকৃত এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত বর্তমানে কারাগারে আছেন। এই সাত জনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে র্যাব জানিয়েছে।
গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এলাকায় চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান।
ঘটনার পর কক্সবাজার পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, রাশেদ তার পরিচয় দিয়ে ‘তল্লাশিতে বাধা দেন’। পরে ‘পিস্তল বের করলে’ চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ তাকে গুলি করে। তবে পুলিশের এমন ভাষ্য নিয়ে শুরু থেকেই প্রশ্ন ওঠে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহত সাবেক সেনা কর্মকর্তার এক সঙ্গীর বক্তব্যের সঙ্গে পুলিশের ভাষ্যের কিছুটা অমিল রয়েছে বলে একটি সূত্র জানায়। এমন প্রেক্ষাপটে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে উচ্চ পর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ ঘটনায় বুধবার সকালে টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ পুলিশের ৯ সদস্যের বিরুদ্ধে কক্সবাজারের আদালতে মামলা করেন সিনহা রাশেদের বোন শারমিন শাহরিয়া। আদালতের নির্দেশে বুধবার রাতেই মামলাটি টেকনাফ থানায় নথিভুক্ত হয়।
এরপর বৃহস্পতিবার কক্সবাজারে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন ওসি প্রদীপসহ ৭ পুলিশ সদস্য। পরে র্যাবের তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনে তাদের ৭ দিনের করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এরপর সাতজন পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।