নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : করোনাভাইরাসের উপসর্গ আছে—এমন রোগীকে ব্যক্তিগত সুরক্ষা পোশাক (পিপিই) ছাড়াই প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আজ বুধবার এই নির্দেশ জারির পর চিকিৎসকদের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দেয়।
পারসোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট বা পিপিই হলো করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে মুক্ত থেকে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্দেশিত পোশাক নীতিমালা। এর আওতায় রয়েছে মেডিকেল মাস্ক, গাউন, গগলস, ফেস শিল্ড, হেভি ডিউটি গ্লাভস ও বুট।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল) আমিনুল হাসান স্বাক্ষরিত ওই নির্দেশে বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো রোগীর কোভিড-১৯–এর লক্ষণ থাকে, তবে প্রথমে চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দেবেন এবং প্রয়োজনে পিপিই পরিধানকৃত দ্বিতীয় চিকিৎসকের কাছে প্রেরণ করবেন এবং তিনি পিপিই পরিহিত অবস্থায় রোগীকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করিবেন।’ ওই আদেশে আরও বলা হয়, সরকারি-বেসরকারি সব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসক কোনো রোগীকে চিকিৎসা দিতে অস্বীকৃতি জানাতে পারবেন না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আমিনুল হাসান বলেন, প্রথম চিকিৎসক দূরত্ব বজায় রেখে সেবা দেবেন। দ্বিতীয় চিকিৎসক ভালো করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন বলে তাঁকে পিপিই পরতে বলা হয়েছে।
এদিকে আজই রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত পিপিই পাওয়া গেছে ৩ লাখ ৫৭ হাজার। এর মধ্যে ২ লাখ ৯১ হাজার বিতরণ করা হয়েছে। আমিনুল হাসান বলেন, ইতিমধ্যে বিতরণ করা পিপিইগুলো চিকিৎসকদের হাতে পৌঁছেছে।
চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একটি পিপিই একবারের বেশি পরা যায় না। নাম না প্রকাশ করার শর্তে একজন চিকিৎসক বলেন, কোথাও কোথাও এক পিপিই ভাগ করে পরতে বলা হয়েছে।
এদিকে সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, খুলনা স্বাস্থ্য বিভাগ ও ময়মনসিংহের সিভিল সার্জন নিজ দায়িত্বে চিকিৎসকদের পিপিই সংগ্রহের নির্দেশ জারি করেন। সিভিল সার্জন এ বি এম মশিউল আলমের লেখা ওই চিঠিতে বলা হয়, যেহেতু বারবার চাহিদাপত্র পাঠানোর পরও কেন্দ্রীয়ভাবে চাহিদা মোতাবেক পিপিই সরবরাহ করা হচ্ছে না, এমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক স্থানীয়ভাবে পিপিই সংগ্রহের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি চিকিৎসকদের কমপক্ষে ২০ সেট সার্জিক্যাল গাউন, ক্যাপ, মাস্ক তৈরি করে প্রতিদিন অটোক্লেভ করে ব্যবহারের নির্দেশ দেন। তিনি আরও বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাঁকে চিকিৎসকদের রেইনকোট, কিচেন গ্লাভস ও কাপড়ের তৈরি মাস্ক ব্যবহার করতে বলেছেন।
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসকেরা পিপিই সংকটের কথা নানাভাবে জানিয়েছেন। তাঁরা অভিযোগ করেন, এ ব্যাপারে সরকারের উদাসীনতা রয়েছে। এর মধ্যেই আজ এই নির্দেশনা জারি হলো।