ওষুধ ছাড়াই চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর করার ঘরোয়া পদ্ধতি

নয়াবার্ত‍া প্রতিবেদক : গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটি নাই এমন লোক খুব কমই পাওয়া যাবে। আর এর যন্ত্রণা কতখানি অস্বস্তিকর ভুক্তভোগী মাত্রই বিষয়টি অনুধাবন করতে পারেন। একটু ভাজাপোড়া অথবা দাওয়াত-পার্টিতে মশলাযু্ক্ত খাবার খেলেই শুরু হয়ে যায় গ্যাস্ট্রিকের অস্বস্তিকর সমস্যা। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে সবাই হাত বাড়ান ওষুধের দিকে।

খোঁজ নিয়ে দেখুন সারাদেশে যে পরিমাণ গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ বিক্রি হয় অন্য সব রোগ মিলেও এ পরিমাণ হয় না। অথচ ওষুধের উপর নির্ভরশীল না হয়ে খাবারের দিকে মনযোগী হয়ে কিছু নিয়ম মেনে চললেই গ্যাস্ট্রিক আপনার ধারে-কাছেও ঘেঁষতে পারবে না।

তাহলে জেনে নেওয়া যাক ওষুধ ছাড়াই কীভাবে গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তি পাবেন-

শসা: শসা পেট ঠাণ্ডা রাখতে অনেক বেশি কার্যকর। এতে রয়েছে ফ্লেভানয়েড ও অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান যা পেটে গ্যাসের উদ্রেক কমায়।

দই: দই আমাদের হজম শক্তি বাড়াতে সহায়তা করে। এতে করে দ্রুত খাবার হজম হয়, ফলে পেটে গ্যাস হওয়ার প্রবণতা কমে আসে।

পেঁপে: পেঁপেতে রয়েছে পাপায়া নামের এনজাইম যা হজমশক্তি বাড়ায়। নিয়মিত পেঁপে খাওয়ার অভ্যাস করলেও গ্যাসের সমস্যা কমে।

কলা ও কমলা: কলা ও কমলা পাকস্থলির অতিরিক্ত সোডিয়াম দূর করতে সহায়তা করে। ফলে গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়াও কলার দ্রবীভূত হতে সক্ষম ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ক্ষমতা রাখে। সারাদিনে অন্তত দুটি কলা খান। পেট পরিষ্কার রাখতে কলার জুড়ি মেলা ভার।

আদা: আদা সব চাইতে কার্যকরী অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানসমৃদ্ধ খাবার। পেট ফাঁপা ও পেটে গ্যাস হলে আদা কুচি করে লবণ দিয়ে খান, দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্যাসের সমস্যা সমাধান হবে।

লবঙ্গ: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, লবঙ্গে উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান শরীরে প্রবেশ করার সাথে সাথেই গ্যাসের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না। তাই এবার থেকে বেশি মাত্রায় খাবার খাওয়ার পর বুক জ্বালা ও ঢেঁকুর উঠলে দু-একটি লবঙ্গ খেয়ে ফেলতে ভুলবেন না যেন!

অ্যালোভেরা: অ্যালোভেরায় উপস্থিত নানাবিধ খনিজ একদিকে যেমন ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায়, তেমনি হজম ক্ষমতার উন্নতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয়, অ্যালোভেরার উপাদান পেটে তৈরি হওয়া অ্যাসিডের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। ফলে অ্যাসিডিটির সমস্যা একেবারে নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

পুদিনা পাতার পানি: এক কাপ পানিতে ৫টি পুদিনা পাতা দিয়ে ফুটিয়ে খান। পেট ফাঁপা, বমিভাব দূরে রাখতে এর বিকল্প নেই।

রসুন: অ্যাসিডিটির সমস্যা কমাতে রসুনের কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে। এক্ষেত্রে এক কোয়া রসুন খেয়ে ফেললেই স্টমাকে অ্যাসিড ক্ষরণের মাত্রা স্বাভাবিক হতে শুরু করে। ফলে গ্যাস সংক্রান্ত বিভিন্ন উপসর্গ ধীরে ধীরে কমে যেতে শুরু করে।

ডাবের পানি: ডাবের পানি খেলে হজম ক্ষমতা বাড়ে এবং সব খাবার সহজেই হজম হয়ে যায়। এছাড়া গ্যাসের সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায় নিয়মিত ডাবের পানি খেলে। তাই সম্ভব হলে প্রতিদিন ডাবের পানি খাওয়ার অভ্যাস করুন। তাহলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।

এছাড়া ওজন কমানো, খাবার গ্রহণের সময়ের সঠিক ব্যবধান রাখা, খালি পেটে চা না খাওয়া ইত্যাদি বিষয়গুলো নিজের আয়ত্বে রাখতে পারলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে চিরতরে মুক্তি পেতে পারেন।

গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া খুব বেশি কঠিন কিছু নয়। শুধু একটু নজর রাখতে হবে নিজের খাওয়া-দাওয়ার প্রতি। উল্লেখিত খাবারগুলোর সঙ্গে আঁশ জাতীয় খাবার বেশি বেশি করে নিয়মিত খাওয়া শুরু করুন তাহলে দেখবেন আপনাকে আর গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগতে হবে না। কিনতে হবে না ওষুধ এবং সাশ্রয় হবে আপনার উপার্জিত অর্থ।

Share