১৪ ঘণ্টা লাশ পড়ে ছিল করোনা ইউনিটে

নিজস্ব জেলা প্রতিবেদক : চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর পর ১৪ ঘণ্টার বেশি সময় লাশ পড়ে ছিল নড়াইল সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মেঝেতে। এ সময়ের মধ্যে কেউ লাশটির খোঁজ নিতে আসেননি। এতে আশপাশের রোগীদের মধ্যে অস্বস্তি দেখা দেয়।

গতকাল বুধবার দিবাগত রাত একটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় করোনা ইউনিটে খন্দকার মিজানুর রহমান (৫২) নামের একজনের মৃত্যু হয়। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া তিনটা পর্যন্ত সেখান থেকে লাশটি সরানোর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। পরে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে স্বজনেরা এসে লাশটি নিয়ে যান।

মারা যাওয়া খন্দকার মিজানুর রহমান নড়াইল জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের অফিস সহকারী। তিনি রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার কসবা-মাজাইল গ্রামের খন্দকার নূরুল ইসলামের ছেলে।

বেলা আড়াইটার দিকে জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক তুহিন কান্তি ঘোষ বলেন, জেলা পরিবার-পরিকল্পনার কার্যালয়ের এক কর্মীকে এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়ার জন্য পাঠানো হয়েছিল।

এদিকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আজ দুপুর ১২টার দিকে হাসপাতালের নিচতলার করোনা ইউনিটে দেখা যায়, ৩০ শয্যার করোনা ইউনিট। সব কটি শয্যায় করোনা শনাক্ত ও উপসর্গ নিয়ে রোগী ভর্তি আছেন। মেঝেতে লাশটি পড়ে আছে। লাশটি সাদা কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া। লাশ ঘিরে মাছি ওড়াউড়ি করছিল। লাশের পেট ফুলে গেছে।

লাশটির পাশের শয্যায় করোনার উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন আজাদুর রহমান। তাঁর ছেলে ফজলে রাফি বলেন, গতকাল রাত ১০টার দিকে কয়েকজন লোক অসুস্থ অবস্থায় ওই ব্যক্তিকে এই ইউনিটে নিয়ে আসেন। এর তিন ঘণ্টা পর রাত একটার দিকে তিনি মারা যান।

রোগী ও স্বজনেরা জানান, এভাবে একটি লাশ সামনে নিয়ে ভয়াবহ এক রোগের চিকিৎসা নিচ্ছেন তাঁরা। এতে মানসিক অবস্থা কেমন হয়? লাশটি এখান থেকে সরিয়ে রাখা যেত।

হাসপাতালটির নার্স হেনা পারভীনের বাসায় ভাড়া ছিলেন খন্দকার মিজানুর রহমান। হেনা পারভীন বলেন, চার থেকে পাঁচ মাস আগে থেকে তাঁর বাসার নিচতলায় ভাড়া থাকতেন মিজানুর রহমান। তিনি বিয়ে করেননি। গতকাল সন্ধ্যায় অসুস্থ হওয়ার খবর পান। রাত ১০টার দিকে হাসপাতালে নিয়ে তাঁকে ভর্তি করান। পরে রাত একটার দিকে তিনি মারা যান।

আজ বেলা একটার দিকে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) এ এফ এম মশিউর রহমান স্বজনদের খবর দেওয়ার কথা জানান। হাসপাতালের করোনা ইউনিটে দায়িত্বরত নার্স বাসনা সাহা বলেন, আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে স্বজনেরা এসে লাশটি নিয়ে গেছেন।

Share