নয়াবার্তা প্রতিবেদক : জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর রপ্তানিকারকদের সময় ও ব্যয় বাঁচাতে ৩ হাজার ১৩৭টি বন্ড লাইসেন্সের মেয়াদ তিন বছর করতে যাচ্ছে। বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ এই লাইসেন্সের মেয়াদ বাড়াতে দীর্ঘদিন ধরে এনবিআরকে জানিয়ে আসছিল। বর্তমানে রপ্তানিকারকদের দুই বছর পর লাইসেন্সের মেয়াদ বাড়িয়ে নিতে হয়। ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সংগঠন লাইসেন্সের মেয়াদ বাড়াতে বিভিন্ন সময় এনবিআরকে জানিয়ে আসছে। এর প্রেক্ষিতে এনবিআরের কাস্টমস বন্ড উইংয়ের অভ্যন্তরীণ এক মিটিংয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, এনবিআরের নিয়ম অনুযায়ী, একটি রপ্তানিমুখী কারখানাকে বন্ড লাইসেন্স নেওয়ার জন্য প্রায় ৩০ ধরণের শর্ত পরিপালন করতে হয়। যার মধ্যে কয়েকটি শর্ত একটি ছোট পুঁজির কারখানার পক্ষে মানা সম্ভব হয় না। বর্তমানে এনবিআরের অধীনস্থ ঢাকা ও চট্টগ্রাম বন্ড কমিশনারেটের তথ্য মতে, সক্রিয় বন্ড লাইসেন্সের সংখ্যা হচ্ছে ৩ হাজার ১৩৭টি। এর মধ্যে ঢাকায় ২ হাজার ৪৩৭টি এবং অবশিষ্ট প্রায় ৭শ’টি চট্টগ্রামে। এই লাইসেন্স দিয়ে শুল্কমুক্ত সুবিধায় কাঁচামাল আমদানি করে গার্মেন্টস মালিকরা। আর বর্তমানে বন্ড লাইসেন্সবিহীন রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১১৫০, যেখানে প্রায় ৭ লাখ শ্রমিক আছে। এসব প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক রপ্তানির পরিমাণ ৬ বিলিয়ন ডলারের উপরে। ব্যাক-টু-ব্যাক এলসি খোলার জন্য রপ্তানিকারক বা প্রচ্ছন্ন রপ্তানিকারকদের বন্ড লাইসেন্স থাকার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, তিন বছরের লাইসেন্স পেতে হলে রপ্তানিকারকদের লাইসেন্স পাওয়ার পর তিন বছরের মধ্যে দুই বছরের নিরীক্ষা সম্পাদন করা থাকতে হবে। এছাড়া এই তিন বছরের মধ্যে এক বছরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম থাকতে হবে। তবে এনবিআর কিছু ঝুঁকির বিষয়েও আলোচনা করে ঐ মিটিংয়ে। এনবিআর সূত্র জানায়, শতভাগ রপ্তানিমুখী বন্ডেড প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেক বছর নিরীক্ষা সম্পাদনের বাধ্যবাধকতা থাকলেও অনেক প্রতিষ্ঠান তা করে না। ফলে লাইসেন্সের মেয়াদ দুই বছরের পরিবর্তে তিন বছর করা হলে নিরীক্ষা সম্পাদনা ব্যাহত হতে পারে। নন কমপ্লায়েন্ট প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং রাজস্ব ঝুঁকি বাড়বে। তবে কমপ্লায়েন্ট প্রতিষ্ঠানের জন্য বন্ড লাইসেন্সের মেয়াদ তিন বছর করা হলে তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম আরও সহজ হবে।