‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ আইনে অন্তর্ভুক্ত করতে নোটিশ

নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : সম্মতি ছাড়া স্ত্রীর সঙ্গে যৌন সঙ্গমকে ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ হিসেবে গণ্য করে আইন সংশোধন করতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

রবিবার একাত্তর টেলিভিশনের জ্যেষ্ঠ বার্তাকক্ষ সম্পাদক ওয়াহিদা আফসানার পক্ষে সংশ্লিষ্টদের কাছে রেজিস্ট্রি ডাকে নোটিশটি পাঠিয়েছেন আইনজীবী মো. জাহিদ চৌধুরী জনি।

বিবাদী আইন সচিব, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন কমিশন ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান, মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তর ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে সাতদিন সময় দেওয়া হয়েছে।

এই সময়ের মধ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ও দণ্ডবিধিসহ সংশ্লিষ্ট সব আইন ও বিধিতে ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ অন্তর্ভুক্ত করে আলাদা গেজেট প্রকাশের অনুরোধ জানানো হয়েছে।

যথাসময়ে পদক্ষেপ না নিলে হাই কোর্টে রিট আবেদন করাসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও সতর্ক করা হয়েছে নোটিসে।

আইনজীবী জাহিদ বলেন, ভারতসহ বিশ্বের ১৫০টি দেশে বৈবাহিক ধর্ষণ নিয়ে আলাদা আইন আছে বা এ সংক্রান্ত বিধান আছে। আমাদের দেশে সেটি নাই। মূল কথা হচ্ছে কারো অসম্মতিতে বা জোর করে যৌন সঙ্গম করলেই সেটা ধর্ষণ। এ বিষয়টাকে অনেকেই অন্যভাবে ব্যাখ্যা করতে পারে।

১৯৯৩ সালে জাতিসংঘ বৈবাহিক ধর্ষণকে মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত সেটাকে স্বীকৃতি দেয়নি।

বেসরকারি সংস্থা ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’র পরিসংখ্যান উদ্বৃত করে নোটিসে বলা হয়েছে, গত এপ্রিলে কমপক্ষে ৪ হাজার ২৪৯ জন নারী ও ৪৫৬ শিশু পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়েছে। তার মধ্যে ৬৫ জেলায় ২৭ নারী বৈবাহিক ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।

নোটিশে বলা হয়, দেশের অধিকাংশ বিবাহিত নারী বৈবাহিক ধর্ষণ বিষয়ে সচেতন নন। পুরুষের পাশাপাশি অনেক নারীও মনে করেন স্ত্রী হচ্ছে স্বামী বা পুরুষের সম্পত্তি। পুরুষ বা স্বামীটি হচ্ছে স্বত্ত্বাধিকারী।

নোটিশে বলা হয়েছে, একজন ভুক্তোভোগী নারীর কাছে ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ ধর্ষণের চাইতেও মারাত্মক এবং যন্ত্রণাদায়ক। দেশ অনেক দিক থেকে উন্নতি করেছে। কিন্তু বৈবাহিক ধর্ষণকে এখনও অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে পারছে না।

ফলে নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে বৈবাহিক ধর্ষণ বিষয়ে আইন প্রণয়নের এটাই উপযুক্ত সময় আইন প্রণেতাদের জন্য।

Share