যে কারণে গ্রেফতার হলেন মামুনুল


নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : বেশ কয়েক বছর যাবৎ দেশে আলোচনায় আসে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। ২০১৩ সালে মতিঝিলের শাপলা চত্ত্বরে সরকার বিরোধী আন্দোলন করায় দেশব্যাপি আলোচনায় আসে হেফাজতে ইসলাম। এরপর থেকেই দেশজুড়ে নানা ধরনের জ্বালাও পোড়াও আন্দোলন ও ভাঙচুর করে সহিংসতা তৈরি করতো দলটি।

গত বছরের (১৫ নভেম্বর) চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসা মিলনায়তনে আয়োজিত এ সম্মেলনের মাধ্যমে হেফাজতে ইসলামের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। যেখানে আমির হিসেবে মনোনীত হয়েছেন আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী এবং মহাসচিব হিসেবে মনোনীত হয়েছেন জমিয়ত মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী।

একই সঙ্গে হেফাজতের ১৫১ জনের কেন্দ্রীয় কমিটিও ঘোষণা করেন তিনি। কমিটিতে ৩২ জন নায়েবে আমির, ৪ জন যুগ্ম মহাসচিব, ১৮ জন সহকারী মহাসচিবের পদ ঘোষণা করা হয়েছে।

এই কমিটিতে দুই নম্বর যুগ্মমহাসচিব হিসেবে মাওলানা মামুনুল হকের নাম ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকেই নানা কারণে আলোচনায় উঠে আসে মামুনুল হক।

গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত দেশে বিভিন্ন সহিংসতা ও নাশকতায় ১৭ জনের মৃত্যু হয়। সারাদেশে এসব ঘটনায় প্রায় অর্ধশতাধিক মামলা হয়েছে। যে আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন মামুনুল হক।

পরে গত ২৬ মার্চ রাজধানীর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম প্রাঙ্গণে সহিংসতার ঘটনায় হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা হিসেবে আরও ২ হাজার ব্যক্তিকে আসামি করে গত ৫ এপ্রিল পল্টন থানায় মামলা করা হয়।

হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিবের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন কারণে সম্প্রতি সময়ে বেশ আলোচিত। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে রয়াল রিসোর্টে এক নারীসহ অবরুদ্ধ হন এ নেতা। তিনি দাবি করেন সঙ্গে থাকা নারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী। তাকে অবরুদ্ধ করার ঘটনায় ৩ এপ্রিল তার সমর্থকরা রিসোর্টটিতে ভাঙচুর চালায়। পুলিশের ওপর হামলা ও রিসোর্টে ভাঙচুরের ঘটনার দু’দিন পর ৬ এপ্রিল রাতে সোনারগাঁ থানায় তিনটি মামলা হয়। পুলিশ বাদী হয়ে দুটি এবং আহত এক সাংবাদিক বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। তিনটি মামলাতে মামুনুল হককে প্রধান আসামি করে ৮৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা হিসেবে ৬শ’ জনকে আসামি করা হয়েছে।

দীর্ঘদিন তাকে নজরদারির পর আজ রবিবার ( ১৮ এপ্রিল) দুপুরে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগ।

গ্রেফতারের পর তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) হারুণ অর রশিদ তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ২০২০ সালে মোহাম্মাদপুরে একটি ভাঙচুরের মামলায় মামুনুলকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি মামলা আছে মতিঝিল, পল্টন ও নারায়ণগঞ্জে। পরে সেগুলো সমন্বয় করা হবে। আগামীকাল সোমবার মামুনুলকে আদালতে তোলা হবে।

Share