নড়াইলের বাদশা সাতক্ষীরায় এসে প্রধানমন্ত্রী মনোনীত ডিরেক্টর!

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরায় এসে প্রধানমন্ত্রীর মনোনীত ডিরেক্টর পরিচয়দানকারী প্রতারক নড়াইলের বাদশাকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।প্রতারক বাদশার পুরো নাম এসএম বাদশা মিয়া (৩৭)। সে নড়াইলের নুর ইসলামের ছেলে।

সম্প্রতি সাতক্ষীরার বিভিন্ন থানায় নিজেকে প্রধানমন্ত্রী মনোনীত এলজিইডি ডিরেক্টর পরিচয় দিয়ে তদবির কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল।

শনিবার সকালে তাকে সাতক্ষীরার কামালনগরের বাইপাস সড়কের শফির মুদির দোকানের পাশ থেকে গ্রেপ্তার করে।

বিকেলে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের ড্রিল হাউসে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে সাতক্ষীরার এসপি মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘রিজেন্ট শাহেদের মতো সাতক্ষীরার আরেক শীর্ষ প্রতারক এই বাদশা মিয়া। তার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিবসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নকল নোট প্যাড, এমপিদের নামে বানানো সিল, সংসদ সদস্যদের ডিও লেটার ও বিভিন্ন প্রকার নিয়োগপত্র এবং জমাজমি সংক্রান্ত কাগজ-পত্র জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘সে (বাদশা) নিজেকে কখনো ডাক্তার, আবার কখনো প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এলজিআরডি ডিরেক্টর পরিচয় দিতেন। আবার কখনো ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও কেন্দ্রীয় সভাপতি হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতেন।’

এসপি মোস্তাফিজ বলেন, ‘এছাড়াও বিভিন্ন মানুষকে টাকার বিনিময়ে চাকরিতে পদোন্নতি, চাকরি পাইয়ে দেওয়া, এমনকি যেকোনো মামলার সুরাহা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়াসহ বিভিন্ন প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে।’

তিনি জানান, বাদশার পিএস আবার কখনো জিন ধরা কবিরাজ পরিচয়ধারী জাহানুর রহমান সাগরকেও গ্রেপ্তার করেছে।

গ্রেপ্তারকালে বাদশার কাছ থেকে ২ রাউন্ড গুলিভর্তি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়। এ সময় সে নিজেকে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংসদ ও বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের কেন্দ্রীয় সভাপতি পরিচয় দেয়।

এসপি মোস্তাফিজ বলেন, বাদশা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রী, এমপিসহ) অনেকের ছবি সংগ্রহ করে তাদের ছবির সঙ্গে নিজের ছবি বসিয়ে (এডিট করে) নিরীহ মানুষের নিকট নিজেকে বিশ্বাসযোগ্য ও প্রভাবশালী হিসেবে উপস্থাপন করে থাকে।

তিনি বলেন, বাদশা সরকারের প্রভাবশালী আমলা, প্রভাবশালী পুলিশ কর্মকর্তাদের নিকট মিথ্যা পরিচয়ে তদবির করে থাকে এবং তদবির না শুনলে বদলি বা চাকরিচ্যুত করার হুমকি-ধমকি দিয়ে থাকে।

এসপি মোস্তাফিজ বলেন, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি পরিচয় দিয়ে দেশের প্রতিটি জেলায় ও উপজেলায় বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগারের কমিটি গঠন করে তাদের নিকট থেকে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে বাদশা।

প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) সজিব খান, সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামসুল হক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন, সহকারী পুলিশ সুপার ডিএসবি সাইফুল ইসলাম, ডিআইওয়ান মিজানুর রহমান, সাতক্ষীরা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বুরহান উদ্দিন, গোয়েন্দা পুলিশের ওসি (ডিবি) ইয়াসিন আলমসহ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Share