ময়মনসিংহ প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের ফুলপুরে তিন সহযোগীকে নিয়ে সাবেক স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্তসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার তাদের ময়মনসিংহ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় আরেকজন পলাতক রয়েছেন।
পুলিশ জানায়, ফুলপুর পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের দিউ গ্রামের রজব আলীর ছেলে মাসুদ রানার (৩০) সঙ্গে প্রায় তিন বছর আগে পয়ারী ইউনিয়নের মাটিচাপুর গ্রামের এক নারীর বিয়ে হয়। ওই সংসারে একটি ছেলেও হয়। কিন্তু এক বছর আগে মাসুদ নিজের স্ত্রীর ওপর নির্যাতন চালিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেন। এরপর আড়াই বছর বয়সী ছেলেকে রেখে তালাক দিয়ে দেন।
এ অবস্থায় ওই নারী নিজের জীবন বাঁচিয়ে রাখার তাগিদে ঢাকায় গিয়ে গৃহকর্মীর কাজ শুরু করেন। ছেলের জন্য প্রতিমাসে পাঁচ হাজার টাকাও দিতে হত মাসুদের হাতে। গত কয়েকদিন আগে মাসুদ খবর পাঠান শিশুটি অসুস্থ। সন্তানের এ খবর পেয়ে গত ১১ জুন তাকে দেখার জন্য ফুলপুর যান ওই নারী। কিন্তু মাসুদ ওই নারীকে ফুলপুরের আমুয়াকান্দা বাজারের রফিকের ভাড়াটিয়া বাসায় নিয়ে যান সন্তানকে দেখানোর জন্য।
সেখানে আগে থেকে ফাঁদ পেতে রাখেন মাসুদ। নিজের আরও তিন বন্ধুকে আগে থেকেই সেখানে রাখেন। তাদের হাতে সাবেক স্ত্রীকে তুলে দেন মাসুদ। এরপর নিজে ও বন্ধুরা মিলে রাতভর ধর্ষণ করেন।
গত বুধবার এ ঘটনায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন ধর্ষণের শিকার ওই নারী। পরে ওইদিন রাতেই বিষয়টি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে পুলিশ। এরপর গত বৃহস্পতিবার বিকেলে অভিযান চালিয়ে ফুলপুর এলাকা প্রধান অভিযুক্ত মাসুদ রানাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে মাসুদকে জিজ্ঞাসাবাদ করে একে একে গ্রেপ্তার করা হয় জজ মিয়া ও আমিনুল ইসলামকে। জজ মিয়া কাড়াহা গ্রামের মিরাজ আলীর ছেলে এবং আমিনুল জাগির কাজিয়াকান্দা গ্রামের রহিছ উদ্দিনের ছেলে। অপর অভিযুক্ত রফিক পলাতক রয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ধর্ষণের শিকার নারী জানান, ছেলের অসুস্থতার খবর দিয়ে তাকে ডেকে নেন সাবেক স্বামী। কিন্তু তাকে নেওয়ার পর বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়। নানা হুমকিও দেওয়া হয়। তার ওপর চলা নির্যাতনের কঠোর বিচার দাবি করেন তিনি।
মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা ফুলপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবদুল মোতালিব চৌধুরী বলেন, মাসুদ প্রকৃতপক্ষে খারাপ মানুষ। সাবেক স্ত্রীকে খবর দিয়ে এনে বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেছেন। ইতোমধ্যে প্রধান অভিযুক্তসহ তিনজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অপর আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।