নয়াবার্তা প্রতিবেদক : চাকরিকালে অনেকবার ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট রেলরুটে যাতায়াত করতে হয়েছে। কখনো কখনো টিকিট ছাড়াই যাতায়াত করেছেন। তবে চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার পর স্বেচ্ছায় আগের সব ভাড়া পরিশোধ করে দিয়েছেন সদ্য সাবেক হওয়া সরকারি এক কর্মচারী। জানিয়েছেন মনের শান্তির জন্যই এ কাজটি করেছেন তিনি।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কনস্টেবল এমদাদুল হক (৬১) গত বছরের ডিসেম্বরে অবসরে যান। চাকরিরত অবস্থায় টিকিট ম্যানেজ করতে না পারায় মাঝে মধ্যেই বিভিন্ন ট্রেনে বিনা টিকিটে ভ্রমণ করেছেন তিনি। তবে সেসব যাত্রার রেকর্ড ছিল তার কাছে। গতকাল সোমবার দুপুরে তিনি সে রেকর্ড নিয়ে আসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে বুকিং সহকারীর কাছে। তাকে সব কথা জানিয়ে সেই ভাড়া পরিশোধের ব্যবস্থা করার অনুরোধ করেন।
হিসেবে করে দেখা যায়, তিনি মোট দুই হাজার ৫৩০ টাকা পরিমাণ টিকিট ছাড়া ভ্রমণ করেছেন। তখন স্টেশন বুকিং সহকারী মো. দিদার মোল্লা তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-চট্টগ্রাম পর্যন্ত মহানগর প্রভাতীর দুই হাজার ৫৩০ টাকা সমমূল্যের আসনবিহীন টিকেট ইস্যু করে দেন।
এমদাদুল হক বলেন, চাকরির সময় তিনি ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট রুটে বেশ কয়েকবার বিনা টিকিটে ভ্রমণ করেছেন। কিন্তু অবসরের পর বিষয়টি নিয়ে অপরাধবোধে ভুগছিলেন তিনি।
তিন সন্তানের পিতা সাবেক এই দুদক কর্মী বলেন, এই দেনার দায় তো কোনো পুণ্য দিয়ে শোধ করার উপায় নেই। তাই সরাসরি রেলের খাতেই এ টাকা জমা দিয়ে দিলাম। তাতে আমার দায়মুক্তি হবে কি না জানি না, তবে মানসিক প্রশান্তি অন্তত পাব।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনের বুকিং সহকারী দিদার মোল্লা বলেন, চাকরিরত অবস্থায় এমদাদুল হক বেশ কয়েকবার বিনা টিকিট ভ্রমণ করেছেন। কিন্তু অবসর নেওয়ার পর থেকেই তিনি অনুশোচনায় ভুগছিলেন। তাই তিনি নিজেই রেলওয়ের সাথে যোগাযোগ করেন। ঋণ থেকে মুক্তি পেতে তিনি দুই হাজার ৫৩০ টাকার টিকিট কিনে তার বকেয়া পরিশোধ করেছেন।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার রফিকুল ইসলাম বলেন, এমদাদুল হক সততার এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করায় রেল কর্তৃপক্ষ অভিভূত।
‘দ্য ট্রেন’ নামের একটি ফেসবুক পেজে ঘটনাটি উল্লেখ করে একটি স্ট্যাটাস পোস্ট করার পর বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়।