গুলশানে স্পা সেন্টারে অভিযান, লাফিয়ে পড়ে তরুণীর মৃত্যু

নয়াবার্তা প্রতিবেদক : রাজধানীর গুলশানের ৪৭ নম্বর রোডের কথিত একটি স্পা সেন্টার ও বিউটি পার্লারে অভিযান চালালে দুই তরুণী ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়েছেন। তাদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।

বুধবার বেলা ২টার দিকে গুলশান-২ নম্বরে একটি বহুতল ভবনে এ অভিযান চালায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।

গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন বলেন, ‘উত্তর সিটির ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান চালাচ্ছিলেন গুলশান-২ এর ৪৭ নম্বর সড়কে। অভিযানে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যরা ছিলেন।

‘তখন ছাদ থেকে লাফিয়ে গুরুতর জখম হন দুই তরুণী। তাদের উদ্ধার করে সিটি করপোরেশনের গাড়িতে করে ঢাকা মেডিক‍্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হয়।’

পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, অভিযানের সময় ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে যার মৃত্যু হয়েছে তার নাম ফারজানা আক্তার, বয়স ১৯ বছর। আহতের নাম রিয়া আক্তার, বয়স আনুমানিক ২৩ বছর। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে তার চিকিৎসা চলছে।

পুলিশ জানায়, গুলশানের যে ভবনে অভিযান চলে সেখানে অনুমোদন ছাড়া বাণিজ্যিক কার্যক্রম চলার অভিযোগ ছিল। ডিএনসিসির ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে ২৫ নম্বর ভবনের কথিত স্পা সেন্টারে অভিযান শুরু হয়। দুজন পুলিশ সদস্য সব ফ্লোরে গিয়ে ট্রেড লাইসেন্স ও ভ্যাট পরিশোধ সম্পর্কে তথ্য নেয়ার চেষ্টা করেন।

ভবনটির চারতলায় ভেতর থেকে দরজা বন্ধ থাকায় সন্দেহ তৈরি হয়। ভেতরে অবস্থান করা কেউ দরজা খুলতে রাজি হননি। তখন টিমের অন্য সদস্যদের নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট সেখানে উপস্থিত হন। দরজা খোলার পর ভেতর থেকে ৬ তরুণী ও ৩ যুবককে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ‘পার্লারের আড়ালে দেহ ব্যবসার’ কথা জানান।

আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের সময় সংবাদ আসে নিচের রাস্তায় দুই তরুণী পড়ে আছেন। তারা ভবনটির ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়েছেন। তখন তাদের হাসপাতালে নেয়ার ব্যবস্থা করা হয়।

ভবনটি থেকে আটক ৯ জনকে গুলশান থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

এদিকে ফারজানার স্বামী পরিচয়ে জাহিদ হাসান নামের ব্যক্তি বলেন, ‘আমার স্ত্রী বুধবারই প্রথম বিউটি পার্লারের কাজে গুলশানে যায়। সঙ্গে তার বোন আফসানা ছিল। বেলা ১১টার দিকে তারা খিলক্ষেতের বাসা থেকে কাজের জন্য বের হয়।

‘ফারজানা আহত হওয়ার সংবাদ পেয়ে হাসপাতালে পৌঁছে তার মরদেহ দেখতে পাই। পরে শুনেছি অভিযানের সংবাদ পেয়ে তারা কয়েকজন ছাদ থেকে লাফ দিয়েছিল।’

গুলশানের কোন পার্লারে স্ত্রী কাজে যোগ দিয়েছিলেন তা জানাতে পারেননি জাহিদ। ফারজানার বাড়ি খুলনার বটিয়াঘাটার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে বলে জানান তিনি।

গাজীপুর এলাকায় মুদি ব্যবসা করলেও জাহিদ স্ত্রীকে নিয়ে খিলক্ষেত বটতলায় ভাড়া বাসায় থাকতেন বলে দাবি করেন।

পুলিশ ঘটনার ব্যাপারে জানতে ফারজানার বড় বোন আফসানাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

Share