নয়াবার্তা প্রতিবেদক : ফ্রিল্যান্সার ও শিক্ষার্থীদের স্বস্তি দিতে আগামী অর্থবছরে আমদানি করা ল্যাপটপের ওপর শুল্ক কমানোর পরিকল্পনা করছে সরকার। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ফ্রিল্যান্সিং কার্যক্রমকে উৎসাহিত ও সফটওয়্যার খাত উন্নয়নে সহায়তার অংশ হিসেবে এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে ল্যাপটপে আমদানি শুল্ক ও কর বাবদ পাঁচ শতাংশসহ মোট ৩১ শতাংশ শুল্ক দিতে হচ্ছে। আগামী অর্থবছরে মোট শুল্ক ও কর ২১ শতাংশে নামিয়ে আনতে চায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ‘রাজস্ব বোর্ড আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশে উন্নীত করলেও আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট তুলে নিতে চায়।’ আগামী ৬ জুন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট দেবেন।
ডলারের দাম বেড়ে যাওয়া ও বিদ্যমান কর কাঠামোর কারণে আমদানি করা ল্যাপটপের দাম সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতা ছাড়িয়ে গেছে। ফলে নকল বা রিফারবিশড ল্যাপটপের আমদানি অনেক বেড়েছে।
সরকারের ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ রূপকল্প বাস্তবায়নে ও কম দামে ল্যাপটপ নিশ্চিত করতে এনবিআর সার্বিক শুল্ক কমানোর পরিকল্পনা নিয়েছে।
বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির (বিসিএস) সভাপতি সুব্রত সরকার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘এটা যদি সত্যিই হয়, তাহলে ক্রেতা পর্যায়ে দাম অবশ্যই কমবে।’
‘২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে ল্যাপটপ ও প্রিন্টারের আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট তুলে নেওয়া দাবি জানানো হয়েছিল।’
বিসিএসের বাজেট প্রস্তাব অনুসারে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করেছিল এনবিআর।
সুব্রত সরকার আশা করেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ রূপকল্পের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নেওয়া এই উদ্যোগে ক্রেতাদের সহায়তা করবে। ল্যাপটপের চাহিদার প্রায় শতভাগ আমদানির মাধ্যমে পূরণ করা হয়।
২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি মেয়াদে কম্পিউটার ও আইটি এক্সেসরিজের জন্য ১৩ কোটি ৬০ লাখ ডলারের এলসি খোলা হয়। তবে আইটি ও আইটিইএস খাতে বিদ্যমান কর ছাড়ের মেয়াদ বাড়াতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। ‘আমরা এই ছাড় অন্তত পাঁচ বছর বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছি,’ যোগ করেন তিনি।
এ দিকে, বাজেট প্রস্তাব অনুমোদন পেতে গত সপ্তাহে এনবিআর কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করে কর ছাড়ের বিষয়টি তুলে ধরেন।
‘প্রধানমন্ত্রী তাৎক্ষণিকভাবে প্রস্তাবে সাড়া দেননি’ উল্লেখ করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনবিআরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘পর্যায়ক্রমে কর ছাড় তুলে নেওয়া হতে পারে।’
গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান আইটি ও আইটিইএস খাতে কর ছাড়ের বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, ‘আশা করছি, এটি আরও কয়েক বছর থাকবে।’