রিজার্ভ নামছে ১৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারে

চলতি সপ্তাহে আকুর বিল পরিশোধ

বিশেষ প্রতিনিধি : চলতি সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন আকুভুক্ত ৯টি দেশের আমদানি বিল বাবদ মোট ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ হবে। এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ কমে দাঁড়াবে ১৮ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলারে। এ রিজার্ভ থেকে দায় দেনা প্রায় ৬ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার বাদ দিলে ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ থাকবে ১৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার। যা আইএমএফ’র বেঁধে দেয়া সীমা ১৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলারের চেয়ে কিছুটা কম।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, গতকাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের নির্দেশিত (বিপিএম-৬) মানদণ্ড অনুযায়ী বর্তমানে রিজার্ভ রয়েছে ১৯ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৯৮৭ কোটি ৩৬ লাখ ৪০ হাজার ডলার। আর গ্রস রিজার্ভ রয়েছে ২৫ দশমিক ৪৪ বা ২ হাজার ৫৪৪ কোটি ৩৭ লাখ ২০ হাজার ডলার। সেখান থেকে গত দুই মাসের আকু বিল ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার বাদ যাবে। অথচ গত জুলাই মাসেও বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৬ বিলিয়ন ডলার। তবে আশা জাগাচ্ছে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়। ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে রেমিট্যান্সের পরিমাণ। আগস্ট ও সেপ্টেম্বরের মতো সদ্য বিদায়ী অক্টোবর মাসেও প্রবাসী আয়ের গতি ছিল ঊর্ধ্বমুখী। অক্টোবরে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন বা ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ ৮০ হাজার ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রতি ডলার ১২০ টাকা হিসাবে ২৮ হাজার ৭৪১ কোটি টাকা। এ অংক আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে বেশি। মাসটিতে প্রতিদিন গড়ে ৯২৭ কোটি টাকা পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এর আগের মাস সেপ্টেম্বরে ২ দশমিক ৪০ বিলিয়ন বা ২৪০ কোটি ৪১ লাখ ১০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রতি ডলার ১২০ টাকা হিসাবে ২৮ হাজার ৮৪৯ কোটি ৩২ লাখ টাকার বেশি। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে ১ দশমিক ৯১ বিলিয়ন বা ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স আসে। আগস্ট মাসে আসে ২ দশমিক ২২ বিলিয়ন বা ২২২ কোটি ৪১ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স।
আগের অর্থবছরের শেষ মাস জুনে

রেমিট্যান্স এসেছিল ২ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন বা ২৫৩ কোটি ৮৬ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স। তার আগের মে মাসে আসে ২ দশমিক ২৫ বিলিয়ন বা ২২৫ কোটি ৪৯ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স। এছাড়া এপ্রিলে আসে ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন বা ২০৪ কোটি ৪২ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স। মার্চে আসে ১ দশমিক ৯৯ বিলিয়ন বা ১৯৯ কোটি ৭০ লাখ ৭০ হাজার ডলার, ফেব্রুয়ারিতে আসে ২ দশমিক ১৬ বিলিয়ন বা ২১৬ কোটি ৪৫ লাখ ৬০ হাজার ডলার এবং জানুয়ারিতে আসে ২ দশমিক ১১ বিলিয়ন বা ২১১ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার।
এর আগে দেশের ইতিহাসে একক কোনো মাসে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন বা ২৫৯ কোটি ৮২ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল ২০২০ সালের জুলাই মাসে। বছরভিত্তিক হিসাবে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসে ২০২০-২১ অর্থবছরে। ওই অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স আসে ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ ১০ হাজার ডলার। আর চলতি বছরের জুন মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে মোট ২ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন বা ২৫৩ কোটি ৮৬ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স দেশে এসেছে।

Share