সুন্দরবনে বেড়েছে বনদস্যুদের তৎপরতা

শ্যামনগর প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার পশ্চিম সুন্দরবনাঞ্চলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি কমায় বনদস্যুদের তৎপরতা বেড়েছে। কিছুদিন আগে বন বিভাগের অভিযানে ১০ জেলে উদ্ধারের পর আবারও নতুন করে তিন জেলেকে অপহরণ করেছে বনদস্যুরা।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বনদস্যুদের আস্তানায় পাঁচদিন জিম্মি থাকার পর দুজন দুই লাখ টাকা দিয়ে গত ১২ নভেম্বর মঙ্গলবার রাতে লোকালয়ে ফিরে আসেন। মুক্তিপণের বিনিময়ে বাড়ি ফেরা জেলেরা হলেন, আতাহার হোসেন (৩৫) ও রুহিন সানা (২২)। তারা যথাক্রমে খুলনার কয়রা উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের শফিকুল বিশ্বাস ও রহিম সানার ছেলে।

ফিরে আসা জেলে আতাহার হোসেন জানান, ৮ নভেম্বর সকালে পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের হাঁড়িভাঙ্গা এলাকা থেকে বনদস্যুরা তাদের অপহরণ করে। এসময় তারা পরিবারের সদস্য এবং মহাজনের নম্বর ও নাম নেয়। সোমবার মুক্তি পেয়ে মঙ্গলবার রাতে তারা হরিনগর এলাকার চুনকুড়ি খাল দিয়ে লোকালয়ে ফিরে আসেন। মুক্তিপণের বিষয়ে তাদের মহাজন জানেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ফিরে আসা জেলের মহাজনরা জানান, অপহরণের পর বনদস্যুরা চার লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিল। পরবর্তীতে মুক্তিপণ কমিয়ে দুই লাখ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। ১০ নভেম্বর বিকাশযোগে দুই লাখ টাকা পরিশোধের পর বনদস্যুরা ১১ নভেম্বর রাতে অন্য একটি জেলে নৌকায় তাদের উঠিয়ে দেয়। মঙ্গলবার রাতে পরিবারের কাছে পৌঁছায় তারা।

এদিকে একই বনদস্যু দলের সদস্যরা আতাহার ও রুহিনকে মুক্ত করে দেয়ার সময় আবু বকর গাজী নামে অপর এক জেলেকে জিম্মি করেছে বলে জানা গেছে। শ্যামনগর উপজেলার মথুরাপুর গ্রামের রজব আলীর ছেলে আবু বকরের জন্য ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করার কথা জানিয়েছে তার স্বজনরা। ফিরে আসা জেলেদের দাবি, ২০১৮ সালে র‌্যাবের হাতে আত্মসমর্পণ করা বনদস্যু মজনু আবারও দস্যুতা শুরু করেছে। তিনটি আগ্নেয়াস্ত্রসহ সাত-আট সহযোগী নিয়ে জেলে অপহরণসহ মুক্তিপণ আদায়ে তৎপরতা চালাচ্ছে।

এ বিষয়ে সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) এ.জেড হাছানুর রহমান জানান, বনদস্যুদের অপতৎপরতা প্রতিরোধে সম্প্রতি বন বিভাগ একটি অভিযান পরিচালনা করে ১০ জেলেকে উদ্ধার করা হয়। এছাড়া কিছুদিনের মধ্যে কোস্টগার্ড, র্যাব, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বনে যৌথ অভিযান চালানো হবে।

Share