পোল্ট্রি-ডেইরি খাতে ৪ শতাংশ সুদের ৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল

নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : শস্য ও ফসল খাত ব্যতীত কৃষির অন্যান্য খাত তথা মৌসুম ভিত্তিক ফুল ও ফল চাষ, মৎস্য চাষ, পোল্ট্রি, ডেইরি ও প্রানিসম্পদ খাতে মাত্র ৪ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার একটি পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিজস্ব অর্থায়নে গঠিত তহবিল থেকে ব্যাংকগুলো মাত্র ১ শতাংশ সুদে অর্থ পাবে। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ৫টি আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজের বাইরে এ তহবিল পরিচালিত হবে। আজ সোমবার এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা জারি করে ব্যাংকগুলোতে পাঠানো হয়েছে।

নীতিমালার আলোকে করোনা ভাইরাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্থরা এ তহবিল থেকে ঋণ পাবেন। মৌসুম ভিত্তিক ফুল ও ফল চাষ, মৎস্য চাষ, পোল্ট্রি, ডেইরি ও প্রাণিসম্পদের বাইরে যে সব উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান কৃষক থেকে উৎপাদিত কৃষিপণ্য কিনে সরাসরি বিক্রি করে তাদেরকেও এ স্কিমের আওতায় ঋণ দেওয়া যাবে। তবে কোনো প্রতিষ্ঠানকে এককভাবে ৫ কোটি টাকার বেশি ঋণ দেওয়া যাবে না। এছাড়া অন্য খাতে বিদ্যমান গ্রাহকদের যার যে পরিমাণ ঋণ রয়েছে তার চেয়ে ২০ শতাংশ অতিরিক্ত ঋণ দেওয়া যাবে। তবে এ তহবিল থেকে ঋণ নিয়ে আগের ঋণ সমন্বয় করা যাবে না। একজন ঋণ গ্রহীতা ৬ মাসের গ্রেস পিরিয়ডসহ দেড় বছরের জন্য ঋণ পাবেন। আগে কখনো ঋণ নেননি এরকম গ্রাহকদের প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে ব্যাংকই ঠিক করবে তিনি কতো টাকা ঋণ পাবেন। তবে একটি ব্যাংক কোনো একক খাতে ৩০ শতাংশের বেশি ঋণ দিতে পারবে না।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, ব্যাংকগুলো গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অর্থ নেবে। এর আগে পুনঃঅর্থায়ন নিতে আগ্রহী ব্যাংকগুলোকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে একটি অংশগ্রহণ চুক্তি স্বাক্ষর করতে হবে। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে গ্রাহকের অনূকুলে ঋণ দিয়ে মাসিক ভিত্তিতে পুনঃঅর্থায়নের জন্য আবেদন করতে হবে। এ তহবিল থেকে কোন ব্যাংক কি পরিমাণ ঋণ দিতে পারবে তা নির্ভর করবে ওই ব্যাংকের কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা এবং সক্ষমতার ওপর।

নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাপনসহ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সীমিত হয়ে পড়েছে। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দীর্ঘায়িত হলে ভবিষ্যতে খাদ্য উৎপাদন হ্রাসসহ বিভিন্ন বিরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। এ সময় চলতি মূলধন ভিত্তিক হর্টিকালচার অর্থাৎ মৌসুম ভিত্তিক ফুল ও ফল চাষ, মৎস্য চাষ, পোল্ট্রি, ডেইরি ও প্রানিসম্পদ খাতে পর্যাপ্ত অর্থ সরবরাহ নিশ্চিত করা সম্ভব হলে দেশের সার্বিক কৃষিখাত ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে। সে প্রেক্ষিতে ওই খাতসমূহের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার একটি পুনঃঅর্থায়ন স্কীম গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক প্রণীত কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালার আলোকে ব্যাংকগুলো মোট লক্ষ্যমাত্রার ন্যূনতম ৬০ শতাংশ শস্য ও ফসল খাতে ঋণ বিতরণের নির্দেশনা রয়েছে। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছর কৃষি খাতে ব্যাংকগুলোর জন্যে নির্ধারিত ২৪ হাজার ১২৪ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার ৬০ শতাংশ তথা প্রায় ১৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা শস্য ও ফসল খাতে ঋণ বিতরণ করা সম্ভব হবে। শস্য ও ফসল খাতে চলমান ঋণপ্রবাহ পর্যাপ্ত থাকায় এ খাত অপেক্ষা কৃষির চলতি মুলধন ভিত্তিক খাতসমূহে অধিকতর ক্ষতি হতে পারে বিধায় এ খাতগুলিতে ঋণের প্রবাহ নিশ্চিত করা আবশ্যক।

Share