নিজস্ব বিনোদন প্রতিবেদক : মুমূর্ষু ঢালিউড। করোনার কারণে চার মাস ধরে নেই কোনো ছবির শুটিং। বেশির ভাগ শিল্পী ও কলাকুশলী ঘরে বসে আছেন। প্রযোজক, পরিচালক ও অভিনয়শিল্পীদের অনেকে পেশা বদলের কথাও ভাবছেন। কলাকুশলীদের অনেকে অর্থকষ্টে ঢাকা ছেড়েছেন। ঠিক এই সময়ে দুই নায়িকা অপু বিশ্বাস ও পরীমনির বাড়িতে পৌঁছে গেছে বিলাসবহুল দুটি গাড়ি। অপু কিনেছেন অডি থ্রি সেলুন, পরীমনি রয়েল ব্লু রঙের মাসেরাতি। করোনার এই দুঃসময়ে দুই নায়িকার বাড়িতে নতুন গাড়ি বিস্মিত করেছে চলচ্চিত্রের অনেককে। কেউ কেউ আবার অভিনন্দনও জানিয়েছেন।
নতুন গাড়ির মালিক হওয়া প্রসঙ্গে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেননি দুই নায়িকার কেউই। কত খরচ পড়ল জানতে চাইলেও এড়িয়ে গেছেন। ঈদের ঠিক আগমুহূর্তে কেনা অপুর গাড়ির নিবন্ধন ফিসহ দাম পড়েছে ৪৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা। পরীমনির গাড়িটির বাজারমূল্য সাড়ে তিন কোটি টাকা।
অডি ঢাকা সূত্রে জানা গেছে, ৩০ জুলাই লাল রঙের অডি থ্রি সেলুন কার চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাসকে হস্তান্তর করা হয়েছে। নায়িকা নিজে উপস্থিত থেকে গাড়িটি গ্রহণ করেছেন। গাড়ি কেনার ১১ দিন আগে চেক প্রতারণার অভিযোগে সংবাদ শিরোনাম হয়েছিলেন অপু বিশ্বাস। চেক প্রতারণার অভিযোগে অপুর বিরুদ্ধে উকিল নোটিশ দিয়েছেন এক ব্যবসায়ী। ঢাকার জজকোর্টের আইনজীবী মুনজুর আলমের মাধ্যমে এ নোটিশ পাঠানো হয়। মুনজুর আলম সংবাদমাধ্যমে বলেছিলেন, ‘১০ লাখ টাকার চেক প্রতারণার কারণে চিত্রনায়িকা অপুর বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। সেই টাকা পরিশোধের জন্য ৩০ দিন সময় দেওয়া হয়েছে। যদি তিনি এ টাকা পরিশোধ না করেন, তাহলে চিত্রনায়িকা অপুর বিরুদ্ধে এনআই (নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট) অ্যাক্টে মামলা করা হবে।’
লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়েছে, ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে অপু বিশ্বাসের সুসম্পর্ক ছিল। সেই সুবাদে প্লট ক্রয়ের কিস্তি পরিশোধ, ব্যক্তিগত গাড়ি ও ফ্ল্যাট ক্রয়ের জন্য অপু তাঁর কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা ঋণ নেন। গত ৭ জুলাই ওই ঋণ পরিশোধের জন্য পাঁচ লাখ টাকার একটি চেক দেন অপু। তবে সেই অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সেটি ফেরত দেয়। বিষয়টি অপুকে জানানো হলে তিনি কালক্ষেপণ করতে থাকেন এবং একপর্যায়ে ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।’
এ বিষয়ে অপু বিশ্বাস সংবাদমাধ্যমে পাল্টা অভিযোগ করে বলেছিলেন, ‘অনেক আগেই আমার এই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছি। আমার চেক বইয়ের মাঝখানের দুটি পাতা পাচ্ছিলাম না। তাই এই বিষয়ে গত বছর থানায় জিডি করেছি। এই চেক নিয়ে কীভাবে আইনি নোটিশ পাঠায়? আমার সম্মান নষ্ট করার জন্য এমনটা করা হয়েছে। আমি তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করব।’
ইতালিয়ান অভিজাত গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফিয়াট অটোমোবাইলসের জনপ্রিয় ব্র্যান্ড মাসেরাতি। আমদানিকারক সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশে এ গাড়ির দাম কমপক্ষে সাড়ে তিন কোটি টাকা। তবে পরীমনির গাড়িবিলাস নতুন নয়। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে পরীমনি ব্যবহার করতেন বিখ্যাত গাড়ি কোম্পানি টয়োটার প্রিমিও ব্র্যান্ডের একটি গাড়ি। মাঝে সত্তরের দশকের নীল রঙের একটি মিতসুবিশি লাঞ্চারও কিনেছিলেন ব্যক্তিগত সংগ্রহশালার জন্য। গাড়ির ব্যাপারে বরাবরই শৌখিন এ নায়িকা সবশেষ ব্যবহার করেন প্রায় কোটি টাকা দামের হ্যারিয়ার। সাদা রঙের সেই গাড়ি গত ২৪ জুন দুর্ঘটনায় দুমড়ে–মুচড়ে যায়। সন্ধ্যায়ই তাঁর বনানীর বাসায় চলে আসে মাসেরাতি গাড়িটি।
দুই নায়িকার কারও ছবি নেই অনেক দিন হলো। অপু বিশ্বাস সবশেষ শুটিং করেন দেবাশীষ বিশ্বাস পরিচালিত ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ টু’ ছবিতে। অন্যদিকে করোনার আগে পরীমনি শুটিং করেছিলেন ‘অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন’ ছবিতে। ছবিগুলো কবে মুক্তি পাবে, তা কেউই বলতে পারে না। পরীমনির হাতে এখনো বেশ কিছু ছবির কাজ রয়েছে। তবে অপু বিশ্বাসের হাতে কোনো ছবি নেই।