নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : করোনা মহামারী শুরুর পর গত ১ এপ্রিল থেকে ১৮ আগস্ট পর্যন্ত ৭০ হাজার ৪২৭ জন বাংলাদেশী কর্মী দেশে ফিরে এসেছেন। তাদের কেউ এসেছেন কাজ হারিয়ে। কেউ এসেছেন ভিসার মেয়াদ নবায়ন না হওয়ায়। অনেকেই বিভিন্ন দেশে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে ফিরেছেন।
বিমানবন্দরের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক এ হিসাব দিয়েছে। ডেস্কের সহকারী পরিচালক ফখরুল আলম স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনে গত বৃহস্পতিবার এ হিসাব প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী ২৩টি দেশ থেকে কর্মী ফেরত এসেছেন। সবচেয়ে বেশি কর্মী ফেরত এসেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ২৩ হাজার ৫০২ জন।
ফেরত আসা কর্মীদের মধ্যে তিন হাজার ৩০৮ জন নারী। সৌদি আরব থেকে সর্বোচ্চ এক হাজার ৭৬ জন নারী কর্মী ফেরত এসেছেন। দেশটি থেকে সবমিলিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১২ হাজার ৯৫০ জন ফেরত এসেছেন। কল্যাণ ডেস্কের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তারা বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ শেষে আউট পাস নিয়ে ফিরেছেন।
আরব আমিরাতে কাজ না থাকায় নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান কর্মীদের ফেরত পাঠিয়েছে। তাদের জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার তারা আরব আমিরাত যেতে পারবেন। তৃতীয় সর্বোচ্চ মালদ্বীপ থেকে ফিরেছেন সাত হাজার ৭৫৯ জন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পর্যটন নির্ভর মালদ্বীপে কাজ না থাকায় তাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে।
কুয়েত থেকে ফেরত এসেছেন সাত হাজার ৩২৯ জন। তাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে ভিসা ও আকামার মেয়াদ শেষ হওয়ায়। সাধারণ ক্ষমার আওতায় ফিরেছেন তারা। ওমান থেকে ফিরেছেন তিন হাজার ৬৪৫ জন। তারাও আউট পাস নিয়ে ফিরেছেন। সিঙ্গাপুর থেকে ফেরা এক হাজার ৩৮২ জনের ভিসার মেয়াদ শেষে নবায়ন হয়নি। তাই তাদের ফিরতে হয়েছে। কাতার থেকে ছয় হাজার ৬৮ জন ফিরেছেন চাকরি চলে যাওয়ায়। অন্য কাজ না পেয়ে তারা দেশে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন। একই কারণে মালয়েশিয়া থেকে ফিরেছেন এক হাজার ৮৩৮ জন। ইরাক থেকে ফিরেছেন এক হাজার ৪১৯ জন।
ইতালি থেকে ফেরত এসেছেন ১৫১ জন। তারা গত ৬ জুলাই ইতালি ফিরে গিয়েছিলেন। করোনা সন্দেহে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তুরস্ক থেকে ফেরত এসেছেন এক হাজার ৭৩০ জন। বৈরুতে বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত লেবানন থেকে কাজ হারিয়ে ফিরেছেন ১২০ জন নারী কর্মীসহ ৫৬৪ জন বাংলাদেশী কর্মী। কাজ না পেয়ে ভিয়েতনাম থেকে ফিরেছেন ১২২ জন। কাজের মেয়াদ নবায়ন না হওয়ায় দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ১০০ জন ফিরেছেন। কাজ না পেয়ে বিভিন্ন দেশ থেকে আরো দুই হাজারের মতো কর্মী ফেরত এসেছেন।
কর্মী ফেরত না পাঠাতে ইতিমধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন এবং প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদের যৌথ স্বাক্ষরে বিভিন্ন নিয়োগকারী দেশকে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ। করোনায় বেকার হয়ে পড়া কর্মীদের অন্যখাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ দিতে অনুরোধ করা হয়।