নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানাধীন তল্লা এলাকায় মসজিদে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডে গুরুতর দগ্ধদের মধ্যে শনিবার দুপুর পর্যন্ত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার সকালে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ১১ জন মারা গেছেন। তবে দগ্ধ হয়ে যারা এখানে ভর্তি আছেন তাদের কেউই আশঙ্কামুক্ত নয়। বেশিরভাগেরই পুড়ে যাওয়ার পরিমাণ অনেক বেশি। অনেককে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়েছে। তবে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
মারা যাওয়া ১১ জন হলেন- রিফাত, যুবায়ের, হুমায়ুন কবির, মোস্তফা কামাল, ইব্রাহীম, জুয়েল, সাব্বির, দেলোয়ার হোসেন, জামাল, জুনায়েদ ও কুদ্দুস ব্যাপারী।
এর মধ্যে সাত বছরের শিশু জুয়েল শুক্রবার গভীর রাতে মারা যায় বলে ডা. সামন্ত লাল সেন নিশ্চিত করেছিলেন। শিশুটির শরীরের ৯৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।
আর শনিবার দুপুরে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের এক চিকিৎসক জানান, সকাল ১১টার দিকে রাসেল নামের দগ্ধ এক রোগী মারা যান। দুপুরে আরও দুজনের মৃত্যু হয়। তবে তাৎক্ষণিকভাবে শেষের দু’জনের পরিচয় জানাতে পারেননি তিনি।
শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে এশার জামাত শেষ হওয়ার পর তল্লা এলাকার সবুজবাগে বাইতুস সালাত জামে মসজিদে এ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ৩৭ জন গুরুতর দগ্ধ হন।তাদের সবাইকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানান, তাদের শরীরের ৩০ থেকে ৯৫ ভাগ পুড়ে গেছে।
নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন জানান, মসজিদটির নিচ দিয়ে গ্যাসের পাইপলাইন নেওয়া হয়েছে। সেই পাইপে ছিদ্র হয়ে গ্যাস নির্গত হচ্ছিল। পুরো মসজিদ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় সব জানালা বন্ধ ছিল। এ কারণে গ্যাস বাইরে বের হতে পারেনি। ওই অবস্থায় কেউ মসজিদের ভেতরে এসি বা ফ্যানের সুইচ বন্ধ করার সময় সৃষ্ট ছোট্ট স্ফূলিঙ্গ থেকেই আগুনের সূত্রপাত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ দুর্ঘটনাকালে মসজিদের ছয়টি এসিই বিস্ফোরিত হয়েছে। খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জের হাজীগঞ্জ ও মণ্ডলপাড়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভায়। পরে মসজিদের মেঝেতে পানি ছিটিয়ে গ্যাস নির্গত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়।
এদিকে এ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে তিনটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। শনিবার নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ পৃথকভাবে কমিটি তিনটি গঠন করে।