এনু-রুপনের বাড়িতে র‍্যাবের অভিযান, সিন্দুকভর্তি টাকা-স্বর্ণালংকার উদ্ধার

নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেফতার গেণ্ডারিয়া আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা এনামুল হক এনু ও তার ভাই রুপন ভূঁইয়ার আরেক বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে র‍্যাব-৩। সোমবার মধ্যরাতে রাজধানীর নারিন্দার লাল মোহন সাহা স্ট্রিটের ছয়তলা বাড়ির নিচতলায় র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সরোয়ার আলমের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় সিন্দুক থেকে বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও ক্যাসিনো সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।

র‌্যাব জানায়, ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেফতার গেণ্ডারিয়া আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা এনামুল হক এনু ও তার ভাই রুপন ভূঁইয়ার একাধিক বাড়ির বিষয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে এই বাড়ির সন্ধান পায় র‍্যাব। পুরান ঢাকার নারিন্দার লাল মোহন সাহা স্ট্রিটের ছয়তলা এই বাড়ির নিচতলার বাসায় কেউ থাকতো না। বেশ সুরক্ষিত অবস্থায় সবকিছু রাখা ছিল এখানে।

অভিযানের বিষয়ে আরও জানা যায়, এনামুল হক এনু ও তার ভাই রুপন ভূঁইয়ার এই বাড়ি থেকে টাকা ভর্তি পাঁচটি সিন্ধুক, পাঁচ কোটি টাকার এফডিআর বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার ও ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের সিল লাগানো বেশ কিছু ক্যাসিনো সরঞ্জাম পাওয়া গেছে। সিন্দুকে পাওয়া নগদ টাকার হিসেবে পেতে টাকা গোনার মেশিন আনা হয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে সেখানে ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকা থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন র‍্যাব কর্মকর্তারা।

উল্লেখ্য, গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি এনামুল হক এনু ছিলেন ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের পরিচালক। তার ভাই রুপন ভূঁইয়া ছিলেন সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। ২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার কয়েকটি ক্লাবে অভিযান চালিয়ে জুয়ার সরঞ্জাম, কয়েক লাখ টাকা ও মদ উদ্ধার করে র‌্যাব। এর মধ্যে ওয়ান্ডারার্স ক্লাব একটি। পরে গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর পুরান ঢাকায় এনু-রুপন এবং তাদের দুই সহযোগীর বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। সে সময় তাদের বাসা থেকে পাঁচ কোটি ৫ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। এছাড়া আট কেজি স্বর্ণ ও ৬টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়। সিন্দুকে পাওয়া এই টাকার উৎস ছিল ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের ক্যাসিনো।

বেশ কিছুদিন পলাতক থাকার পর চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যায় একটি ভবন থেকে এক সহযোগীসহ গ্রেপ্তার হন এনু-রুপন দুই ভাই। তাদের গ্রেফতারের পর সিআইডি জানায়, এনামুল হক এবং রুপন ভূঁইয়ার নামে ঢাকায় ২২টি বাড়ি ও জমি রয়েছে। এছাড়া তাদের ব্যবহার করা পাঁচটি গাড়ির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। বিভিন্ন ব্যাংকে তাদের নামে ৯১টি একাউন্ট রয়েছে। এসব একাউন্টে ১৯ কোটি ১১ লাখ টাকা রয়েছে। ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানের পর থেকে তাদের এসব ব্যাংক একাউন্ট অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করে রাখা হয়েছে।

ঘটনার পর তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসা, জুয়া পরিচালনা, অর্থপাচার, মানি লন্ডারিংয়ের দায়ে মোট সাতটি মামলা দায়ের করা হয়, যার মধ্যে অবৈধ ক্যাসিনো ও জুয়া পরিচালনা ও অর্থ-পাচারের অভিযোগে চারটি মামলার তদন্ত করছে সিআইডি।

Share