নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : সোমবার টানা ৯ ঘণ্টা ম্যারাথন জেরার পর ডিআরডিও গেস্ট হাউজ থেকে হন্তদন্ত হয়ে বের হলেন রিয়া চক্রবর্তী। সঙ্গে ছিলেন ভাই সৌহিক চক্রবর্তী। এদিন ভাইবোন দু’জনকেই সিবিআই গোয়েন্দাদের কড়া জেরার মুখে পড়তে হয় বলে জানা গিয়েছে। উপরন্তু দিনের শেষে নিজের বাড়িতেই কিনা নির্ঝঞ্ঝাটভাবে ঢুকতে পারলেন না অভিনেত্রী। গেটের কাছে উপচে পড়া সাংবাদিকদের ভিড় দেখেই বিরক্ত হন রিয়া। এরপর বিন্দুমাত্র দেরী না করেই সোজা চলে যান সান্তাক্রুজ থানায়। সেখানেই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন অভিনেত্রী। প্রসঙ্গত সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর থেকে আইনের চোখে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগেই দেশবাসীর সিংহভাগের নজরে রিয়া চক্রবর্তী ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’! কাজেই তার প্রত্যেকটি মুহূর্তের খবর পাওয়ার জন্য যে তার দিকে ক্যামেরার লেন্সের তাক থাকবেই, তা বলাই বাহুল্য।
গত শুক্রবারের কথা। অভিনেত্রীর বাড়ির সামনে সংবাদমাধ্যমের ভিড় এবং উৎকণ্ঠা, কৌতূহলী ব্যক্তিদের জমায়েত থাকায় বাড়ির বাইরে পা রাখতে পারেননি তিনি! অবশেষে সিবিআইয়ের দপ্তরে পৌঁছনোর জন্য তাকে মুম্বই পুলিশের দ্বারস্থ হতে হয়। বাড়ি থেকে বেরনোর জন্য পুলিশ প্রশাসনের সাহায্য প্রার্থনা করেছিলেন তিনি। তার আবেদনের ভিত্তিতেই শেষমেশ মুম্বই পুলিশ বাড়ি থেকে রিয়া চক্রবর্তীকে (Rhea Chakraborty) এসকোর্ট করে নিয়ে যায় সান্তাক্রুজের ডিআরডিও গেস্ট হাউজে, যেখানে তদন্তের জন্য আশ্রয় নিয়েছেন সিবিআই গোয়েন্দা আধিকারিকরা। এক প্রকার হুলুস্থূল কাণ্ডই বটে! তার অভিযোগ, স্বাভাবিক জীবন বিপর্যস্ত করে দিচ্ছেন সাংবাদিকরা। আমার ব্যাপারে অনেক ভুয়ো খবর রটানো হচ্ছে। আর সেসবের ভিত্তিতেই সোমবার ফের পুলিশের দ্বারস্থ হন রিয়া। এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের জন্য সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে পুলিশি অভিযোগ দায়ের করলেন অভিনেত্রী।
বর্তমানে কীরকম পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে রিয়াকে? বাড়ির সামনে সাংবাদিকদের ভিড়ে তার বাবার একটি ভিডিও শেয়ার করে অভিনেত্রী সেই অভিজ্ঞতার কথা প্রকাশ্যে এনেছেন। প্রসঙ্গত, গোড়ার দিক থেকেই মিডিয়া ট্রায়ালের বিরোধিতা করে আসছেন অভিনেত্রী। সম্প্রতি টেলিভিশন চ্যানেলের সাক্ষাৎকারেও তিনি সেই প্রসঙ্গ তোলেন। যার প্রেক্ষিতে কিনা রিয়া চক্রবর্তীর পাশে দাঁড়িয়ে বলিউড অভিনেত্রী স্বরা ভাস্কর বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন। রিয়া চক্রবর্তীকে যেভাবে মিডিয়া ট্রায়ালের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে, মুম্বই সন্ত্রাসের অভিযুক্ত আজমল কাসভকেও সম্ভবত এরকম পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়নি, বলেছিলেন স্বরা। রিয়ার পাশে দাঁড়িয়ে একইভাবে মিডিয়া ট্রায়ালের বিরোধিতা করেছেন সোনম কাপুর, তাপসী পান্নু, রামগোপাল ভার্মাও।
ইডি, সিবিআই, নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো- তিন তিনটি কেন্দ্রীয় সংস্থার জেরার মুখে রিয়া চক্রবর্তী যে বেশ কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেই রয়েছেন, তা বোধহয় আর আলাদা করে বলার প্রয়োজন পড়ে না। মাদকচক্র যোগ, ডার্কনেট-এর সঙ্গে রিয়ার সম্পর্ক, একাধিক অভিযোগে অভিযুক্ত অভিনেত্রী।সোমবার সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা (ক্রিমিনাল কেস) দায়ের করল নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো।