‘জুলাই থেকেই’ ভবনের ছাদে হেলিকপ্টার নামানোর সুবিধা

নয়াবার্তা প্রতিবেদক : দেশে ভবনের ছাদে হেলিকপ্টার অবতরণের অনুমতি এই মাসেই দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান মফিদুর রহমান।

সোমবার তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, “ভবনের ছাদে হেলিকপ্টার অবতরণের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অচিরেই এ বিষয়ে সার্কুলার দেওয়া হবে। জুলাই থেকেই এই সুযোগ পাবেন হেলিকপ্টার অপারেটররা।”

বেসরকারি খাতের উড়োজাহাজ ও হেলিকপ্টার সেবাদাতাদের সংগঠন এভিয়েশন অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এওএবি) মফিজুর রহমান বলেন, “আমরা শুনতে পারছি যে চেয়ারম্যান সিভিল এভিয়েশন কাউকে বলেছেন যে, এই মাসের মধ্যেই ভবনের ছাদে হেলিকপ্টার অবতরণের অনুমোদন দেওয়া হবে। তিনি গণমাধ্যমকে এ রকম বলেছেন বলে শুনেছি, তবে আমাদেরকে কিছু বলা হয়নি।”

নভোএয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মফিজুর বলেন, “বাংলাদেশে বেসরকারি হেলিকপ্টার সেবা শুরু হওয়ার পর ভবনের ছাদে হেলিকপ্টার নামতে পারত। হঠাৎ করে তিন-চার বছর আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটা আপত্তি দিয়ে সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাদের আপত্তির বিষয় ছিল, এটার মাধ্যমে মাদক পাচার বা রাষ্ট্রবিরোধী কোনও কাজ হতে পারে।”

তিনি জানান, হেলিকপ্টার ভাড়ার ক্ষেত্রে রোগীদের জন্য দুই ঘণ্টার নোটিসে সিভিল এভিয়েশনের অনুমতি পাওয়া যায়। অন্যান্য ক্ষেত্রে ৪৮ ঘণ্টা আগে সিভিল এভিয়েশনকে জানাতে হয়।

গত সেপ্টেম্বরে এক অনুষ্ঠানে এওএবি প্রেসিডেন্ট অঞ্জন চৌধুরী বলেছিলেন, “দেশে সুউচ্চ স্থাপনার উপরে হেলিকপ্টার অবতরণের জায়গা বা এলিভেটেড হেলিপ্যাডের অনুমোদনের জন্য তিন বছর ধরে তারা যুদ্ধ করছেন। কিন্তু অদ্ভুত কিছু যুক্তি দিয়ে সরকার তা আটকে রেখেছে।

“তাদের যুক্তি যদি হেলিকপ্টারে মাদক পরিবহন করা হয় বা যদি সেটা ক্রাশ করে- তাহলে কী হবে? এ ধরনের ‘যদি’ নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয় কী করে?”

ছাদে হেলিকপ্টার অবতরণের বিষয়ে যুক্তি তুলে ধরে স্কয়ার এয়ারের এ কর্ণধার বলেছিলেন, “প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে রোগী পরিবহনে হেলিকপ্টার খুবই কার্যকরী একটি মাধ্যম। এখন একজন রোগীকে হেলিকপ্টারে এনে যদি ঢাকা বিমানবন্দরে নামাতে হয়; এরপর সেখান থেকে হাসপাতালে নিতে আরও দু ঘণ্টা লাগে। তাহলে কী লাভ হল?”

বেবিচকের ২০১৬ সালের পরিপত্র অনুযায়ী, হেলিকপ্টার চলাচলের ক্ষেত্রে উড্ডয়নের আগেই বেবিচকের অনুমোদন নিতে হবে। অনুমোদিত রুট ধরেই সেটি চলবে এবং অনুমোদিত জায়গাতেই কেবল অবতরণ করতে পারবে।

বেবিচক অনুমোদিত রুট প্ল্যানটিই এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের কাছে দিতে হবে। বেবিচকের অনুমোদন ছাড়া রুট প্ল্যানে কোনও প্রকার পরিবর্তন গ্রহণযোগ্য হবে না।

বাংলাদেশে বেসরকারি পর্যায়ে বাণিজ্যিক হেলিকপ্টার সেবা শুরু হয় ১৯৯৯ সালে। বর্তমানে ১০টি বেসরকারি এয়ারলাইন্স ৩২টি হেলিকপ্টার দিয়ে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। রোগী বহন, পোশাকসহ বিভিন্ন শিল্পখাতের বিদেশি ক্রেতাদের কারখানা পরিদর্শন, শৌখিন ভ্রমণসহ নানা কাজে এসব হেলিকপ্টার ব্যবহৃত হচ্ছে।

Share