পিরোজপুর প্রতিনিধি : ‘তোমার মাইয়ার লাশ মোজাহার মোল্লার বাড়ির পশ্চিম পাশের বালুর মাঠে। সব জানে মেঝো খালা। ইতি মুমিন।’ এমন এক চিরকুটের ভিত্তিতে পিরোজপুরের নাজিরপুরে উপজেলার সদর ইউনিয়নের সাতকাছিমা গ্রামের মান্নান সিকদারে পরিত্যক্ত বাড়ির বালুর মাঠ থেকে এক তরুণীর কঙ্কল উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ সোমবার দুপুরে নাজিরপুর থানা পুলিশ ও ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন টিমের যৌথ অভিযানে ওই কঙ্কলটি উদ্ধার করা হয়।
ধারনা করা হচ্ছে, এ কঙ্কালটি উপজেলার সদর ইউনিয়নের সাতকাছিমা গ্রামের দিনমজুর মো. নজরুল ইসলামের মেয়ে লামিয়া আক্তারের। গত ৫ মাস ধরে সে নিঁখোজ।
লামিয়ার খালা সাবিনা ইয়াসমিন জানান, গত ৬ নভেম্বর তার বোনের মেয়ে লামিয়া আক্তার নিখোঁজ হয়। একই এলাকার মিজান খানের ছেলে তারিকুল ইসলামের সঙ্গে গত প্রায় ৮ মাস আগে লামিয়ার বিয়ে হয়ছিল। বিয়ের আগে তাদের দীর্ঘ ৮ বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তারিকুলের পরিবারের অমতে বিয়ে হওয়ায় লামিয়া তার বাবার বাড়িতে থাকত।
সাবিনা আরও জানান, তারিকুলের বাবা লামিয়াকে তালাক দিতে বললে গত ৫ নভেম্বর তরিকুল শ্বশুরবাড়ি থেকে তার স্ত্রীকে নিজের বাড়ি নিয়ে যান। এর পরদিন ৬ নভেম্বর লামিয়া নিখোঁজ হয়।
এ ঘটনায় ৭ ডিসেম্বর লামিয়ার মা রাজিয়া বেগম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি এবং ২৫ ডিসেম্বর তরিকুলকে প্রধান আসামি করে সাত জনের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা দায়ের করেন।
গতকাল রোববার রাতে টিনের চালের ওপর হঠাৎ করে ইট নিক্ষেপের আওয়াজ পান তারা। এরপর তারা ঘর থেকে বের হয়ে দেখেন, তারিকুল বাড়ির সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে। এ সময় ঘরের সামনের সিঁড়ির ওপর একটি চিরকুট পান তারা। এ চিঠিতে লিখা ছিল, ‘তোমার মাইয়ার লাশ মোজাহার মোল্লার বাড়ির পশ্চিম পাশে বালুর মাঠে। সব জানে মেঝো খালা। ইতি-মুমিন।’
পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি থানা পুলিশকে জানানো হলে পুলিশ ওই রাতেই বালুর মাঠে আসেন। রাতভর পাহারা দেওয়ার পর আজ দুপুরে জায়গাটি খনন করা হয়।
নাজিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হুমায়ুন কবির জানান, গতকাল রাতে ওই পরিবারের পক্ষ থেকে একটি চিরকুট পাওয়ার তথ্য জানানো হয়। এ তথ্যের ভিত্তিতে সেখানে খুঁড়ে কঙ্কাল পাওয়া যায়। কঙ্কালটি নিঁখোজ কিশোরীর হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ডিএনএ পরীক্ষার পর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাাবে।
তিনি আরও জানান, ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে নিখোঁজের অভিযোগ করে গত ২৫ ডিসেম্বর একটি মামলা করা হয়েছ। ওই মামলার ভিত্তিতে পুলিশ দু’জনকে আটক করে। বর্তমানে তারা জামিনে রয়েছেন। মামলার বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছেন।