বিয়ে হয়ে গেলেও কনেকে ছাড়াই ফিরতে হলো বরপক্ষকে

নিজস্ব জেলা প্রতিবেদক : মেয়ে পড়ে সপ্তম শ্রেণিতে। এই বয়সে তাকে বিয়ে দিয়ে শ্বশুরবাড়িতে পাঠানোর তোড়জোড়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে চলে আসেন উপজেলা প্রশাসনের লোকজন। তবে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে আগেই। এ অবস্থায় ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে মেয়েটির বাবার জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি কনে প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত শ্বশুরবাড়িতে যাবে না, এই মর্মে মুচলেকা নেওয়া হয়।

গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের আনোয়ারায় উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের একটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে মেয়ের বাবা বলেন, ‘আমি আসলেই ভুল করেছি। আমি অঙ্গীকার করছি, বিয়ের উপযুক্ত বয়স না হওয়া পর্যন্ত মেয়েকে জামাইয়ের হাতে তুলে দেব না।’

উপজেলা প্রশাসন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মেয়েটি রায়পুর ইউনিয়নের একটি মাদ্রাসায় সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। তার সঙ্গে বিয়ে হয়েছে দরজির কাজ করা এক তরুণের (২৩)। এক সপ্তাহ আগেই গোপনে বিয়ের কাবিননামা সম্পন্ন করা হয়। গতকাল রাতে কনেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বরের কাছে তুলে দেওয়ার কথা ছিল। সে মোতাবেক বরপক্ষের লোকজন যথাসময়ে হাজির হয়ে যান কনের বাড়িতে। এ খবর পৌঁছে যায় উপজেলা প্রশাসনের কাছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর আহমেদ চৌধুরী। তিনি দেখতে পান, ভুয়া জন্মসনদ বানিয়ে বয়স বেশি দেখিয়ে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন বাবা। এ কারণে তাঁকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। আর কাবিননামা আগেই হয়ে যাওয়ায় বিয়ে বন্ধ করার সুযোগ ছিল না। তাই বর ও কনেপক্ষের কাছ থেকে তিনি মুচলেকা নেন। তাতে উভয় পক্ষই অঙ্গীকার করে, প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত কনেকে বরের কাছে পাঠানো হবে না। পরে কনেকে না নিয়েই বরপক্ষ ফিরে যায়।

আনোয়ারা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তানভীর আহমেদ চৌধুরী বলেন, ১৮ বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত মেয়েটি বাবার বাড়িতে থাকবে, এমন শর্ত মেনে নিয়েছে উভয় পক্ষ। আর ভুয়া জন্মসনদ বানিয়ে বয়স বেশি দেখানোর ঘটনায় মেয়েটির বাবাকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

Share