নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ। ১৯৭১ সালের এই দিনে দখলদার পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তার দোসর রাজাকার, আলবদর, আলশামস মিলিতভাবে বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করে। এই হত্যাকাণ্ডের চার দশকের বেশি সময় পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বেশ কয়েক জন অপরাধীর বিচার হয়েছে। কয়েক জনের সাজাও কার্যকর হয়েছে। কিন্তু এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি চৌধুরী মুঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামান খান। পলাতক চৌধুরী মুঈনুদ্দীন আছেন ব্রিটেনে আর আশরাফুজ্জামান খান রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের দেশে ফেরাতে সব রকম কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। একদিন দেশের মাটিতে এনে দণ্ড কার্যকর করা হবে
একাত্তরে বুদ্ধিজীবী হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ছিলেন চৌধুরী মুঈনুউদ্দীন ও আশরাফুজ্জামান খান। ২০১৩ সালের ৩ নভেম্বর যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ তাদের ফাঁসির রায় দেয়। তবে পলাতক থাকায় তাদের বিচার এখনো কার্যকর করা সম্ভব হয়নি।
ট্রাইব্যুনালের রায়ে বলা হয়, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের নেতা ছিলেন চৌধুরী মুঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামান খান। বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের অন্যতম পরিকল্পনাকারী ছিলেন চৌধুরী মুঈনুদ্দিন। আর আশরাফুজ্জামান খান ছিলেন এর প্রধান বাস্তবায়নকারী। রায়ে বিচারকরা বলেন, চৌধুরী মুঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামান খান মানবতা ও মানব সভ্যতার বিরুদ্ধে যে মাত্রার অপরাধ করেছে তাতে সর্বোচ্চ শাস্তি না হলে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে না।
ফেনীর দাগনভূঞা থানার চানপুর গ্রামে ১৯৪৮ সালের নভেম্বরে জন্ম চৌধুরী মুঈনুদ্দীনের। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর মুঈনুদ্দীন পালিয়ে পাকিস্তান চলে যান। সেখান থেকে যান যুক্তরাজ্যে। এখন পর্যন্ত তিনি লন্ডনেই অবস্থান করছেন। অন্যদিকে আশরাফুজ্জামান খানের জন্ম ১৯৪৮ সালে, গোপালগঞ্জের মকসুদপুরের চিলেরপাড় গ্রামে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি পালিয়ে পাকিস্তানে চলে যান এবং কিছুদিন রেডিও পাকিস্তানে কাজ করেন। পরে সেখান থেকে চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে। বর্তমানে আশরাফুজ্জামান খানের ঠিকানা নিউ ইয়র্কের জ্যামাইকা বলে জানা গেছে।
তাদের ফিরিয়ে আনার উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল রবিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, দুই ঘাতক এখন সশরীরে বিদেশে জীবিত আছে, এটা দুঃখজনক। এদের একজন আমেরিকায়, অন্যজন ব্রিটেনে। এখনো তারা দিব্যি লুকিয়ে আছে। ঘাতক, অপরাধীদের আমরা দেশে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। কিন্তু ঐসব দেশ বিভিন্ন ধরনের অজুহাত তুলে এই অপরাধীদের এখনো আমাদের হাতে তুলে দিচ্ছে না। আমরা আশাবাদী, একদিন না একদিন, অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি করব।