বৃহস্পতিবার থেকে পদ্মা সেতুতে চলবে মোটরসাইকেল

নয়াবার্তা প্রতিবেদক : দাবি পূরণ হলো বাইকারদের। অবশেষে শর্ত সাপেক্ষে মোটরসাইকেল চালকদের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে পদ্মা সেতু। আগামী বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে মূল সেতুর সার্ভিস লেন দিয়ে মোটরসাইকেল চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার একনেকের সভা শেষে এসব তথ্য জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

সেতুমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ২০ এপ্রিল সকাল ৬টা থেকে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পদ্মা সেতুর বাম পাশের সার্ভিস লেন দিয়ে চলবে মোটরসাইকেল। সেতুতে মোটরসাইকেলের গতি হবে সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার।

তিনি বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনোভাবেই সার্ভিস লেনের বাইরে মূল সেতুতে মোটরসাইকেল আসতে পারবে না। নির্ধারিত হারে টোল দিতে হবে। নিয়ম মেনে না চললে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হবে।

সেতু বিভাগের সচিব মো. মনজুর হোসেন বলেন, আমরা সাময়িক সময়ের জন্য পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলের অনুমতি দিচ্ছি। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এটি চলবে। যদি বাইকাররা আইন না মানেন, তাহলে এই নির্দেশনা বাতিল করে দেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, বাইকারদের আচরণের ওপর নির্ভর করবে কতদিন এ সুবিধা থাকবে। আমরা তাদের জন্য নির্ধারিত একটা লেন রাখব। এর মধ্যে থাকতে হবে, এর বাইরে যাওয়া যাবে না। সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার গতিতে মোটরসাইকেল চালানো যাবে।

গত বছরের ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর দিন সেতুতে যান চলাচল শুরু হয়। প্রথম দিনে অন্তত ৪৫ হাজার যানবাহন পারাপার হয়। এর মধ্যে মোটরসাইকেল ছিল ২৭ হাজার। ওই দিন রাতে সেতুতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুই তরুণ নিহত হন। এরপর সরকারের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্তে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ করে দেয় সেতু কর্তৃপক্ষ। সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে গত বছর ঈদুল আজহায় আন্তঃজেলায় মোটরসাইকেল চলাচলে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)।

এরপর বাইকারদের বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে সভা-সমাবেশ করে সারা দেশে মোটরসাইকেল চলাচলে অনুমতি দেওয়ার দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি দুই চাকার এই যান পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে চলাচলের দাবি ওঠে। সম্প্রতি এ ব্যাপারে সরকার কঠোর অবস্থানে থাকলেও শেষ পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচলে অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

এই খবর দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে যায়। খুশিতে ফেসবুকে একে একে স্ট্যাটাস দিতে থাকেন অনেকেই। বাইকার গ্রুপগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে ঈদআনন্দ। অনেকেই পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল নিয়ে চলাচলের পুরোনো ছবি দিয়ে স্ট্যাটাস দেন।

এবারের ঈদযাত্রার আগে সড়কের পরিস্থিতি নিয়ে গত ২ এপ্রিল ঢাকায় একটি সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। সংগঠনের মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী সেদিন বলেন, মোটরসাইকেলে ঈদযাত্রার সুযোগ দিলে রাজধানীর ৫ থেকে ৬ লাখ বাইকার দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যেতে পারেন। এতে ঈদযাত্রা খানিকটা স্বস্তিদায়ক হলেও সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ‘বহুলাংশে বেড়ে যাবে’।

Share