মাইকেল জ্যাকসন কি সত্যিই ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেছিলেন?

নয়াবার্তা প্রতিবেদক : মাইকেলের মৃত্যু রহস্যের মত তাঁর ধর্মান্তরিত হওয়ার বিষয়টিও রহস্যজনক। তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন কি করেননি এর পক্ষে-বিপক্ষে এ পর্যন্ত অনেক যুক্তি দাঁড়িয়েছে। যদিও বিশ্ব গণমাধ্যমে তাঁর ধর্মান্তরিত হওয়ার খবরটি বেশ ঢালাওভাবে প্রকাশিত হয়েছে।

২০০৮ সালে ব্রিটেনের ‘দ্য সান’ নামক একটি সংবাদমাধ্যমে মাইকেলের ইসলাম ধর্ম গ্রহণের খবরটি প্রথম প্রকাশিত হয়। এরপর পুরো বিশ্ব গণমাধ্যম তাঁর ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার খবরটি প্রকাশ করে। তিনি নাকি তাঁর প্রযোজক ও গীতিকার বন্ধু ডেভিড ওয়ারনসবি এবং ফিলিপ বাবলের অনুপ্রেরণায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন। নিজের খ্রিষ্টান নাম পরিবর্তন করে মাইকেল থেকে হন মিকাইল। এমনকি আরববাসীদের আদলে তাঁর আলখেল্লা পরা ছবিও প্রকাশিত হয় বিশ্ব গণমাধ্যমে। এসব তথ্য উপাত্ত তাঁর ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার বিষয়টিকে আরও মজবুত করে। কিন্তু মাইকেল কখনোই এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেননি।

২০০৯ সালের ৫ মার্চ তিনি গান নিয়ে বিশ্ব ভ্রমনের ঘোষণা দেন। মুসলিমদের অনেকেই তখন বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ এবং শঙ্কা জানিয়েছেন। কারণ ইসলাম ধর্মে সংগীতের বিষয়ে অনেক বিধি নিষেধ রয়েছে।

অনেকে মাইকেলের ধর্মান্তরিত হওয়ার বিষয়টিকে বিশ্ব রাজনীতির অংশ হিসেবে দেখেছেন। অনেকের মতে, মুসলিম বিশ্বের সহানুভূতি আদায় করার কৌশল হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র এক ধরনের নাটক সাজিয়েছে। নাটকের মুল চরিত্র বানিয়েছে মাইকেলের মত বিশ্বসেরা একজন তারকাকে। যদি তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে মিকাইল হতেন, তাহলে তো তাঁর নিবন্ধিত নামও মিকাইল হওয়ার কথা।

মাইকেলের ধর্মান্তরিত হওয়ার সত্যতা নিয়ে সবচেয়ে বেশি শঙ্কা দেখা দেয় তাঁর মৃত্যুর সময়। তাঁর সমস্ত দাফন-কাফন খ্রিষ্টীয় রীতিতেই সম্পন্ন হয়। এসব দেখে অনেকেই তাঁর ধর্মান্তরিত হওয়ার বিষয়টিকে গুজব বলে উড়িয়ে দেয়।

মাইকেল জ্যাকসনের ধর্ম পরিবর্তন করা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও, তিনি যে ধর্ম এবং সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসী ছিলেন এতে কোনো সন্দেহ নেই। কারণ সকল ধর্মের প্রতি সমান শ্রদ্ধাভক্তি ছিল মাইকেলের। বিখ্যাত উপস্থাপক ‘অপরা উইনফ্রে’ এক সাক্ষাৎকারে মাইকেলের ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন। সেখানে মাইকেল অকপটে সৃষ্টিকর্তার প্রতি তাঁর অগাধ বিশ্বাসের কথা প্রকাশ করেছেন।

১৯৮৯ সালে এক কনফারেন্সে দেওয়া মাইকেল জ্যাকসনের বিবৃতি থেকে জানা যায় মাইকেল ছিলেন বইপোকা। তাঁর অন্যতম প্রিয় বিষয় ছিল ইতিহাস ও ধর্ম। কোরআন, বাইবেলসহ বিশ্বের বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ তিনি পড়েছেন।

Share