নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : আট থেকে দশ বছরের এক শিশুর চোখেমুখে উদ্বেগের ছাপ। দুই হাত ও পায়ের সাহায্যে পলিথিন পেঁচিয়ে পানির পাইপ চেপে ধরে আছে। বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এমন একটি ছবি ভাইরাল হয়। উৎসুক জনতার কারণে উদ্ধারকাজে সমস্যা হয়েছে বলে একদিকে যেমন সমালোচনা ছিল, তেমনি নাইম নামের এই শিশুটির কাজ প্রশংসাও কুড়িয়েছে।নাইম আনন্দ স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। থাকে কড়াইলের বৌবাজারে। বাবা রুহুল আমীন ডাব বিক্রেতা। মা গৃহকর্মীর কাজ করেন। ছোট এক বোন আছে। নাইমের গ্রামের বাড়ি বরিশালে। নাইম নিজেও জানে তার ছবি ইতিমধ্যে ভাইরাল। আজ শুক্রবার তাকে পাওয়া গেল এফআর টাওয়ারের সামনে।কীভাবে নাইম খবর পেল এখানে আগুন লেগেছে?নাইম বলে, ‘দুপুর একটা বাজে আগুন লাগার কথা শুনলাম। দুইটা বাজে চলে এলাম। এসে দেখি আগুনটা দাউ দাউ করে জ্বলছে। ধোঁয়ার কারণে মানুষ দম নিতে পারছে না। তারপর দেখি পাশে পাইপ ফাটা। চাপ দিয়ে ধরে রাখলাম যাতে পানিটা অন্য কাজে খরচ না হয়, আগুন নেভাতে খরচ হয়। প্রায় ২০ মিনিট ধরে রেখেছিলাম।’শুধু পানির পাইপ ধরে রেখেই নয়। নাইম উৎসুক জনতার ভিড় সামলিয়ে ফায়ার সার্ভিস, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ উদ্ধারকাজ সংশ্লিষ্টদের নির্বিঘ্নে এফআর টাওয়ারে ঢুকতেও সহায়তা করেছে। কারণ নাইম জানে সেখানে সাধারণ মানুষের ঢোকার অনুমতি নেই। তাই তারা যেন ঢুকতে না পারে সে জন্য অন্যদের সঙ্গে সেও কাজ করে। বেলা পাঁচটায় সে বাড়ি ফিরে যায়।ফাটা পাইপ থেকে পানি যাতে ছড়িয়ে পড়ে নষ্ট না হয় সে জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে নাইম।নাইম পুলিশের কর্মকর্তা হতে চায়। জনগণের সেবা করবে জানিয়ে বলে, ‘মানুষের প্রয়োজনে আমি বের হব।’বনানীর ফারুক রূপায়ণ (এফআর) টাওয়ারে গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা একটার দিকে আগুন লাগে। সন্ধ্যার দিকে তা নিয়ন্ত্রণে আসে। এ ঘটনায় ২৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হন ৭৩ জন।