নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : রাজধানীর নবাবপুরে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের নামে বরাদ্দ হওয়া বাড়ি দখলে ভূমিদস্যু চক্রকে সহায়তার অভিযোগে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ ইব্রাহিম খানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ-১ অধিশাখা থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে ইব্রাহিম খানকে বরখাস্তের আদেশ জারি করা হয়। স্বরাষ্ট্র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর বিধি ১২(১) অনুযায়ী সাময়িক বরখাস্ত করা সমীচীন হবে বলে প্রতীয়মান হওয়ায় তাকে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত (সাসপেন্ড) করা হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ইব্রাহিম খান এর আগে লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন। ওই সময় বংশাল থানা এলাকায় একটি মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি ভূমি দস্যুদের কাছে দখল করিয়ে দিতে সহায়তার অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে।
পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত ডিআইজি(পার্সোনেল ম্যানেজমেন্ট-১) আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে, পুরান ঢাকার ২২১ নবাবপুর রোডে আজহারুল হক খান ও তার ভাই ফজলুল হক খানের বাড়ি দখলে স্থানীয় ভূমিদস্যু জাবেদ উদ্দিন শেখ ও তার ভাই আবেদ উদ্দিন শেখকে দখলে সহায়তা করেছেন ইব্রাহীম। এছাড়া বংশালে একটি মার্কেট দখলে ভূমিদস্যু চক্রকে সহায়তার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। নবাবপুরে অর্পিত সম্পত্তি হিসাবে চিহ্নিত তিনতলা ওই বাড়ির লিজসূত্রে মালিক ছিলেন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক। বাড়িতে অবস্থিত মাসুদা কর্পোরেশনের ম্যানেজার মুক্তিযোদ্ধা কেএম শহিদুল্লাহ। শামসুল হকের মৃত্যুর পর তার ওয়ারিশরা তাদের নামে লিজ নিয়ে ভোগদখল করে আসছিলেন। পুলিশের তৎকালীন লালবাগ জোনের ডিসি ইব্রাহিমের (বিদায়ী ডিসি ওয়ারী জোন) যোগসাজশে ভূমিদস্যু চক্র ভবনের বাসিন্দাদের জিম্মী করে গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ওই বাড়ি দখল ও ৫ কোটি টাকার মালামাল লুট করে। এমনকি তিনতলা ভবন ভেঙ্গে তারা সেখানে নতুন ভবন নির্মাণ করেছে।
এসব নিয়ে অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর পুলিশ ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্তে ডিসি ইব্রাহীমের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। সর্বশেষ ২৩ মে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে লিখিতভাবে তার বক্তব্য চাওয়া হয়। তার বক্তব্য সন্তোষজনক না হওয়ায় এবং ভূমিদস্যু চক্রের পক্ষাবলম্বনের একাধিক অভিযোগ, তথ্য ও প্রমাণ মেলায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হয়।