নয়াবার্তা প্রতিবেদক : আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় রাজধানীসহ সারা দেশে মোতায়েন করা হয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী, র্যাব ফোর্সেস শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) থেকে আগামী ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সব নির্বাচনী এলাকায় দায়িত্ব পালন করবে।
শুক্রবার র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে সমগ্র দেশের নিরাপত্তা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি র্যাব মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনে হেলিকপ্টার ও ডগ স্কোয়াড নিয়োগ করা হবে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে র্যাব ফোর্সেস যেসব দায়িত্ব পালন করবে-
১. নির্বাচনী এলাকায় সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করবে।
২. আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সহায়তা দেবে। এ ছাড়া ভোটকেন্দ্র ও ভোট গণনার ক্ষেত্রে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে দায়িত্ব পালন করবে।
৩. নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রতিটি আসনে কমপক্ষে দুটি টহল দল মোতায়েন ও প্রতিটি ব্যাটালিয়নে দুটি টহল স্ট্রাইকিং ফোর্স রিজার্ভ থাকবে।
৪. র্যাব সদর দপ্তরে ১৫টি টহল দল সেন্ট্রাল রিজার্ভ হিসেবে প্রস্তুত থাকবে এবং দেশব্যাপী ২৫টি অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করা হবে। এ ছাড়া অন্যান্য মোতায়েনের জন্য ৫০টি টহল দল প্রস্তুতসহ দেশব্যাপী ৭০০টির অধিক টহল দল আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করবে।
৫. গোয়েন্দা কার্যক্রমের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হবে এবং নিজস্ব সুইপিং ও বোম্ব ডিসপোজাল টিম প্রস্তুত থাকবে। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনে হেলিকপ্টার ও ডগ স্কোয়াড নিয়োগ করা হবে।
৬. অগ্রগণ্যতার ভিত্তিতে ঝুঁকিপূর্ণ/গুরুত্বপূর্ণ আসন বিবেচনায় মোতায়েনের জন্য বিভিন্ন ব্যাটালিয়ন থেকে টহলসমূহ গুরুত্বপূর্ণ/ঝুঁকিপূর্ণ আসন বিবেচনায় মোতায়েনের জন্য সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকবে।
৭. বিশেষ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য র্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তরের স্পেশাল ফোর্স সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকবে।
৮. র্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তরের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট সাতটি জোনে বিভক্ত হয়ে মোতায়েনের জন্য সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকবে।
৯. র্যাব ডগ স্কোয়াডের ১০টি দল র্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তরে সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকবে। এ ছাড়া দেশব্যাপী বিভিন্ন জায়গায় চেকপোস্ট স্থাপন করে তল্লাশির মাধ্যমে নিরাপত্তা জোরদার করা হবে।
১০. নির্বাচন কমিশনের তথ্য ও গোয়েন্দা সূত্রে ঝুঁকিপূর্ণ আসনসমূহে অধিক টহল নিয়োজিত রাখার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
এদিকে শুক্রবার থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় রাজধানীসহ সারা দেশে এক হাজার ১৫১ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
নির্বাচন উপলক্ষে সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আগামী ৩ জানুয়ারি থেকে সশস্ত্র বাহিনী মাঠে নামবে।
ইসি জানিয়েছিল, ৩০০ সংসদীয় আসনে আগামী ৩ থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত সশস্ত্র বাহিনী নিয়োগের জন্য আদেশ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ।
নির্বাচনকালীন সেনাবাহিনী মোতায়েনে গত ১৭ ডিসেম্বর নীতিগত অনুমোদন দেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। পরদিন ১৮ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ও বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার লক্ষ্যে সেনা মোতায়েনে সশস্ত্র বাহিনীকে চিঠি দেয় ইসি।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৭ জানুয়ারি ৩০০ আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
গত ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবন থেকে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন।