নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : ‘বাবা জানো, আমাদের একটা ময়না পাখি আছে না, সে আজকে আমার নাম ধরে ডেকেছে, আর এ কথাটা না মা কিছুতেই বিশ্বাস করছে না, আমি কি তাহলে ভুল শুনেছি, কেমন লাগে বলো তো’- মোবাইল ফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোনের এ একটি সংলাপের মাধ্যমেই সবার প্রিয়মুখ হয়ে ওঠেন শিশুশিল্পী দীঘি। ১৩ বছর আগের সেই দীঘি এখন আর ছোট্টটি নেই। চঞ্চলা এক অষ্টাদশী। চলনে-বলনে সৌন্দর্য ঝরে পড়ে যেন। সে সৌন্দর্যের আবেদনে দর্শকদেরও মন ভোলাচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ভঙ্গিমার ভিডিও প্রকাশ করে। তিনি এখন পুরো দস্তুর নায়িকা। তা হবেনই না কেন? কারণ তার রক্তে আছে অভিনয়। মা দোয়েল ছিলেন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী। বাবা সুব্রত এখনও নিয়মিত অভিনয় করছেন।
প্রথম বিজ্ঞাপনটি সাফল্য পাওয়ার পর দীঘির গতিপথ হয়ে ওঠে চলচ্চিত্রে। শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেন ‘চাচ্চু’, ‘দাদিমা’, ‘পাঁচ টাকার প্রেম’সহ একের পর এক হিট ছবিতে। নায়ক রাজ্জাকের সঙ্গে জুটি বেঁধে ছোট্ট শিশুর রোমান্টিক গান কিংবা ডেঞ্জারম্যান ডিপজলের সঙ্গে দুষ্টু মিষ্টি দীঘি রাতারাতি তারকা বনে যান। ছোট্টবেলাতেই তার নাম পৌঁছে গেল সারাদেশে। শিশুশিল্পী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন দীঘি।
সেই ছোট্ট দীঘিই এবার হচ্ছেন সিনেমার নায়িকা। যদিও বেশ ক’বছর ধরেই নায়িকা হিসেবে আসি আসি করছিলেন দীঘি। দর্শকরাও আশায় বুক বেঁধেছিলেন কবে আসছেন নায়িকা দীঘি? মাঝে বেশ ক’বার খবরের পাতায় প্রকাশিতও হয় শাকিব খানের নায়িকা হয়ে ফিরছেন দীঘি! সেটা খবর পর্যন্তই। বাস্তবে দেখা গেল ভিন্ন। দীঘি জানালেন নতুন ছবিতে নায়িকা হয়ে শুটিংয়ে অংশ নেওয়ার খবর। সেটা নতুন এক নায়কের সঙ্গে। তার আগে আরও একটি চমকের খবর দিয়েছিলেন দীঘি। বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক নিয়ে বলিউড নির্মাতা শ্যাম বেনেগাল যে চলচ্চিত্র নির্মাণ করছেন তাতে শেখ মুজিবের স্ত্রী ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ওরফে ‘রেণু’র চরিত্রে দীঘিকে দেখা যাবে। করোনা পরিস্থিতির কারণে ছবিটির শুটিং এখন স্থগিত। এই থমকে যাওয়া সময়েই নায়িকা হয়ে আসার খবর দিলেন দোয়েলকন্যা। দীঘি বলেন, ‘অবশেষে নায়িকা হিসেবে কাজ করছি। সবার দোয়া চাই।’
শাপলা মিডিয়ার ব্যানারে একসঙ্গে দুটি ছবিতে নায়িকা হয়ে অভিনয়ে ফিরছেন দীঘি। এর মধ্যে ‘টুঙ্গিপাড়ার মিয়াভাই’ নামের একটি ছবির কাজও শুরু করেছেন। আরেকটির নাম ‘ধামাকা’। দুটি ছবিতেই দীঘির নায়ক হিসেবে দেখা যাবে শান্ত খানকে। দুটি ছবি নিয়ে বেশ আশাবাদী দীঘি। ছবি দুটোর পর আরও তিনটি ছবিতে এরইমধ্যে চুক্তিবদ্ধও হয়েছেন।
সবেমাত্র ইন্টারমিডিয়েট পড়ূয়া এই অভিনেত্রী এ বয়সেই বড় বড় অভিনেতার মতো পরিপকস্ফ কথা বলছেন। জানাচ্ছেন কেবল নায়িকা হয়ে সুনাম পেতে কাজ করতে চাননা তিনি। মায়ের মতো অভিনেত্রী হিসেবে সবার অন্তরে জায়গা করতে চান। সেই সঙ্গে চান মানুষের ভালোবাসা। দীঘি বলেন, ‘অভিনয় করব এতে কখনোই আমার বাবা-মার আপত্তি ছিল না। তারা চান আমিও অভিনয় করি। অভিনয়কে ভালোবাসি। তাই অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসাটা আমার জন্মসূত্রেই পাওয়া। অভিনয়ে তারকাখ্যাতি জিনিসটা ভাগ্যের ব্যাপার। আমি যখন অনেক ছোট, সেই সময়ে অল্প কিছু কাজ করে মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। আশা করছি নায়িকা হয়েও দর্শকদের প্রশংসা পাব।’ নায়িকা হওয়ার আগে
থেকেই দীঘি খুব জনপ্রিয় একটা নাম সিনেমায়। ছেলে-বুড়ো সবার কাছেই দীঘি বেশ পছন্দের। যদিও তা শিশুশিল্পী হিসেবে। এই নায়িকা দীঘি কতটা সে নামের ওপর সুবিচার করতে পারবেন সেটা দেখা যাবে আগামীতে। তবে দীঘি বেশ আটঘাট বেঁধেই নামছেন মাঠে। ঢাকাই ছবিতে শাবনূরদের উত্তরসূরি হতে সব ধরনের চেষ্টা থাকবে তার মধ্যে, কথায় কথায় সমকালকে জানালেন সে কথাও।