নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : গতকাল ছিল শিল্পী কুমার বিশ্বজিতের ৫৭তম জন্মবার্ষিকী। মাকে ছাড়া প্রথম জন্মদিন কাটালেন এই শিল্পী। করোনাকালে জন্মদিনটা কেমন গেল—সেসব নিয়ে কথা বললেন এই শিল্পী।
শুভ জন্মদিন, কেমন আছেন?
ধন্যবাদ। বিশ্ব যখন ভালো নেই, তখন বিশ্বজিৎ কী করে ভালো থাকে? এমন দুঃসময় পৃথিবীতে আর আসেনি। এ রকম সময়ে সব উপলক্ষ গৌণ হয়ে যায়। মানুষ সামাজিক জীব, অথচ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে দূরে থাকতে। কোলাকুলি তো আর ভার্চ্যুয়ালি হবে না। মৃত্যুতেও ছেলে বাবার কাছে, বাবা ছেলের কাছে যেতে চায় না। চারপাশে কেবল বিয়োগান্ত খবর, স্বাভাবিকভাবে মন ভালো থাকে না।
সেদিক থেকেও এ জন্মদিনটা বিশেষ, তা–ই না?
গত ডিসেম্বরে মাকে হারিয়েছি। সেই শোক এখনো মন থেকে মোছেনি। মাকে ছাড়া এটাই আমার প্রথম জন্মদিন। ভাবলেই বুকটা আটকে আসে, মা যদি এখন অসুস্থ হতেন, তাঁকে হাসপাতালেও নিতে পারতাম না। এ সময় যাঁদের প্রিয়জন চলে গেছেন, তাঁদের আত্মার প্রতি আমার শ্রদ্ধা।
কে প্রথম শুভেচ্ছা জানাল?
রাত ১২টায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন আমার স্ত্রী নাঈমা সুলতানা। তারপর রাত থেকে সারা দিন ফোন, খুদে বার্তা ও ফেসবুকে শুভেচ্ছা পেতে পেতে আমি আপ্লুত। যে ভালোবাসা পেয়েছি, তা আমাকে অনেক অনুপ্রাণিত করেছে। যা আমি দিইনি, তার চেয়ে বেশি পেয়েছি। জানি না ভালোবাসার এ ঋণ আমি কীভাবে শোধ করব? ইচ্ছা করে আরও কিছুদিন বাঁচি, আরও কিছু কাজ করি।
শুভেচ্ছাসিক্ত হয়ে কেমন লাগছে?
এ সময় এত এত ভালোবাসা পাব, ভাবিনি। বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ, আত্মীয়স্বজন, বন্ধু–শুভাকাঙ্ক্ষী ও ভক্ত-অনুরাগীরা শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। আমি আসলে সৌভাগ্যবান ও ঈশ্বরের ভালোবাসা পাওয়া একজন মানুষ।
সবচেয়ে আনন্দের কোন জন্মদিনের কথা মনে পড়ে?
১৯৭৭ সালের জন্মদিনটা আজও স্মরণীয়। ব্যান্ড গড়ব, একটা ড্রাম সেট খুব দরকার ছিল। তখন চাইলেই সেটা ভাড়া নেওয়া বা জোগাড় করা সম্ভব ছিল না। সে বছর জন্মদিনে বাবা কিনে দিলেন ড্রাম সেট। সেই আনন্দের কথা বলে বোঝানো যাবে না।
আপনি চলচ্চিত্রে গানের পাশাপাশি অভিনয়ও করেছেন। বিজ্ঞাপনচিত্রের মডেল হয়েছেন। এসব কেন করেছেন? পরে আর কেনই–বা করলেন না?
চাপে পড়ে করতে হয়েছে। হিরো হওয়ার অফারও এসেছিল আমার কাছে। বহু কষ্টে সেসব অ্যাভয়েড করেছি। বাকিগুলো অ্যাভয়েড করতে পারিনি চাপে পড়ে। নিজের ট্রাকের বাইরে এ কাজগুলো আমি করতে চাইনি। কারণ, আমার ওসব করার গুণ নেই।
করোনা মহামারিতে আপনিও অবদান রাখছেন শুনেছি। এ ব্যাপারে একটু বলবেন?
নিজের সামর্থ্যমতো যেটা করেছি, সেটিই শেষ নয়। আমি করে যেতে চাই। আর সেসব নিয়ে তেমন কিছু বলতে চাই না। তবে এই মহামারির সম্মুখযোদ্ধা ডাক্তার, নার্স, সাংবাদিক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সামরিক বাহিনী, সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী—সবার প্রতি সশ্রদ্ধ সালাম, কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা।