সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতীর সাময়িক বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। তবে ওই রায়ের ভিত্তিতে দায়িত্বে পুনর্বহালের আনুষ্ঠানিক আদেশ জারির আগেই তিনি পৌরসভায় গেলে বাধার সম্মুখীন হয়ে ফিরে গেছেন। পৌরসভার বর্তমান ভারপ্রাপ্ত মেয়র কাজী ফিরোজ হাসানসহ বেশ কয়েকজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর তাঁকে ঢুকতে দেননি। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সাতক্ষীরা পৌরসভা কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
সাতক্ষীরা পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতীকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দিয়েছে। কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে সাতক্ষীরা সদর থানায় তাঁর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা হয়েছে। চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি তিনি ওই মামলায় মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক তাঁর জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
পরবর্তীতে আপিল করলে ৯ ফেব্রুয়ারি জেলা ও দায়রা জজ তাঁকে জামিনে মুক্তি দেন। এ দিকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আদেশের বিরুদ্ধে চিশতি হাইকোর্টে রিট করেন। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বিত হাইকোর্ট ডিভিশনের দ্বৈত বেঞ্চ চিশতীর বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করেন।
এ বিষয়ে তাজকিন আহমেদ চিশতী বলেন, ‘আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী বর্তমানে মেয়র পদে আমার দায়িত্ব বুঝে নিতে কোনো বাধা নেই। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত মেয়র ও সরকারদলীয় কর্মকর্তারা আদালতের সেই নির্দেশ লঙ্ঘন করেছেন। আমি এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেব।’
তবে ভারপ্রাপ্ত মেয়র কাজী ফিরোজ হাসান বলেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত তিনিই মেয়র থাকবেন। আদালতের নির্দেশে মেয়র পদ থেকে সরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সাতক্ষীরা শাখার উপপরিচালক মাশরুবা ফেরদৌস বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ আমাদের জেলা অফিসের মাধ্যমে প্রধান কার্যালয়ে পাঠাতে হবে। সেখান থেকে পুনরায় চিঠি আসার পরই মেয়র দায়িত্ব বুঝে নিতে পারবেন।’
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা আদালতের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আব্দুল মজিদ বলেন, ‘পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতীর মাধ্যমে পৌরসভায় পৌঁছে যাওয়া মহামান্য হাইকোর্টের আদেশকে অবশ্যই সম্মান দেখাতে হবে। আদেশের কপি যদি সঠিক থাকে, তাহলে সেটা স্থানীয় সরকার বিভাগে জমা দেওয়ার প্রয়োজন নেই বলে আমি মনে করি।’