বন্ধুদের দিয়ে ছাত্রীকে ধর্ষণের হুমকি ছাত্রলীগ নেত্রীর

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) এক ছাত্রীকে বন্ধুদের দিয়ে ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের এক নেত্রীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গত সোমবার দুপুরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ছাত্রী। এ ছাড়া ওই ছাত্রীকে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগও পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত আতিফা হক শেফা বিশ্ববিদ্যালয়ের মন্নুজান হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি এবং আইইআরের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

লিখিত অভিযোগে ওই ছাত্রী বলেছেন, কিছুদিন ধরে তিনি ইনস্টিটিউটের কয়েকজন বড় ভাইবোনের কাছে ক্রমাগত মানসিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছেন। গত ২২ ফেব্রুয়ারি তিনি তার ইনস্টিটিউটের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের এক সিনিয়র ভাইয়ের সঙ্গে ক্যাম্পাসের বাইরে একটি রেস্তোরাঁয় খেতে যান। সেখানে ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ও সোহরাওয়ার্দী হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আতিকুর রহমান, ইতি মণ্ডল, শাহবাজ তন্ময়, আতিফা হক শেফা উপস্থিত ছিলেন। তারা সেখানে নানাবিধ অশালীন কথাবার্তা ও অপ্রত্যাশিত অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে থাকেন। পরে তারা আরও নানাভাবে মানসিকভাবে হেনস্তা করতে থাকেন।

গত রোববার তাকে ফোন দিয়ে দেখা করার জন্য আতিকুর ও আতিফা চাপ দিতে থাকেন। বাধ্য হয়ে তিনি তার কয়েকজন সহপাঠীকে নিয়ে বিভাগের সামনের চায়ের দোকানে যান। সেখানে তার চরিত্র নিয়ে তাকে গালাগাল করা হয় এবং ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়। সঙ্গে থাকা অন্য সহপাঠীদেরও হেনস্তা করা হয়। এ ছাড়াও তাকে হল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন তারা।

এর আগে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বড় ভাইকে ডেকে নিয়ে দুজনকে নিয়ে নানা রকম বাজে কথা বলেন। এ সময় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে বন্ধুদের দিয়ে ধর্ষণের হুমকি দেন। ওই সময় করা একটি অডিও রেকর্ড প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে।

অডিওতে শেফাকে বলতে শোনা যায়, ‘ওকে (ভুক্তভোগী) হলে গিয়ে ধরব। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যাচের মানুষের সাথে ও (ভুক্তভোগী) ঘুরে বেরিয়েছে। ওকে প্রোটেকশন দিলে ওর লাইফ আরও দুর্বিষহ করব। ওরে যেখানে পাব সেখানেই…। এবার ওরে এনে দেব, তোরা (ছাত্রলীগ নেত্রীর বন্ধু)…।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে আতিফা হক শেফা ও আতিকুর রহমানের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন ধরেননি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’

ইনস্টিটউটের তদন্ত কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আকতার বানু বলেন, ‘আমি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে লিখিত অভিযোগের পাশাপাশি অন্যান্য ডকুমেন্টস দিতে বলেছি। সব ডকুমেন্টস এখনো পাইনি। পেলে আমরা দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে ব্যবস্থা নেব।’

সার্বিক বিষয়ে ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘আমি তো নতুন যোগদান করেছি। অভিযোগপত্রটি এখনো আমার হাতে আসেনি। যদি অভিযোগ পাই তাহলে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Share