ব্যাংক থেকে টাকা গায়েব, কিছুই জানতেন না গ্রাহক

রাজশাহী প্রতিবেদক : ইস্টার্ণ ব্যাংকের রাজশাহী শাখা থেকে এক গ্রাহকের পৌনে তিন লাখ টাকা গায়েব হয়ে গেছে। মুঠোফোনে আর্থিক সেবাদানকারী একটি প্রতিষ্ঠানের ১০টি নম্বরে এই টাকা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। অথচ গ্রাহক কিছুই জানতেন না। ব্যাংক হিসাবের আর্থিক বিবরণী (ব্যাংক স্টেটমেন্ট) তুলে দেখেন, তাঁর জমানো টাকা প্রায় শেষ।

ভুক্তভোগী গ্রাহকের নাম আতিকুর রহমান। তাঁর সন্দেহ, ঘটনার সঙ্গে ব্যাংকের কেউ জড়িত রয়েছেন। এ ঘটনায় তিনি গতকাল সোমবার রাজশাহী সাইবার আদালতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি নালিশি মামলা করেন। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে আদেশটি বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের রাজশাহী ও প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।

গ্রাহকের পক্ষে আদালতে মামলাটি করেন জেলা জজ আদালতের আইনজীবী শাহীন আলম। আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইসমত আরা এই মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, ভুক্তভোগী আতিকুর রহমান একটি বিমা প্রতিষ্ঠানের শাখাপ্রধান। তাঁর হিসাব নম্বর থেকে ২ লাখ ৭৬ হাজার ৪০০ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। ১৬ ও ১৭ আগস্ট ১০টি বিকাশ নম্বরে ১০টি লেনদেনের মাধ্যমে টাকাগুলো সরানো হয়।

বাদী আতিকুর রহমান বলেন, তিনি গত ১৫ আগস্ট ব্যক্তিগত কাজে ভারতে যান। ১৯ আগস্ট দেশে ফেরেন। ৩ সেপ্টেম্বর তিনি ব্যাংকে টাকা তুলতে যান। তখন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায়, তাঁর হিসাবে পর্যাপ্ত টাকা নেই। এরপর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ওই গ্রাহককে তাঁর ব্যাংক হিসাবের আর্থিক বিবরণী দেয়। তাতে টাকা সরানোর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়।

মামলা থেকে জানা যায়, আতিকুরের গায়েব হওয়া ২ লাখ ৭৬ হাজার ৪০০ টাকার মধ্যে ০১৭৩৩২৭৫১৬১ নম্বরে ২০ হাজার ৪০০ টাকা, ০১৭৯০১৪৫৪০২ ০১৬৪০০৯৩৯২৩ ও ০১৬৪০০৯৩৯২২ নম্বরে ২৫ হাজার ৫০০ টাকা করে এবং ০১৭৮৭০২৮৩৩৩, ০১৮২৮১৬২৫১০, ০১৭৭৪৬২৭৪৪৩, ০১৭৯৭৮৫১৫৮০, ০১৭৮৭০০৩৩৮০ ও ০১৫১৭০০২৫৮৯ নম্বরে ৩০ হাজার টাকা করে তুলে নেওয়া হয়েছে।

মামলার আরজি আরও বলা হয়, দেশের বাইরে যাওয়ার জন্য গ্রাহক আতিকুর রহমান ব্যাংকে ডলার এনডোর্স করতে গিয়েছিলেন। তিনি যে ভারতে যাচ্ছেন, তা ব্যাংকের অনেক কর্মকর্তাই জানতেন। আতিকুরের সন্দেহ, তাঁর অনুপস্থিতিতে ব্যাংকের এক বা একাধিক কর্মকর্তা এই টাকা তুলে নিয়েছেন। টাকা তোলার বিষয়টি জানতে পারার পরদিন ৪ সেপ্টেম্বর তিনি নগরের বোয়ালিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পুলিশ প্রাথমিক তদন্তও করে। এরপর তিনি আদালতে নালিশি মামলাটি করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইস্টার্ণ ব্যাংকের রাজশাহী শাখার ব্যবস্থাপক আবির আহমেদ খান ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের অনুমতি ছাড়া কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইসমত আরা বলেন, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দিয়েছেন।

আগামী ২৫ অক্টোবর আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত কার্যক্রমে সর্বাত্মক সহযোগিতার জন্য ইস্টার্ণ ব্যাংকের রাজশাহী শাখাকে নির্দেশনাও দিয়েছেন আদালত।

Share