বরিশালে ট্রাফিকের গলার কাঁটা আটক যানবাহন

বরিশাল প্রতিবেদক : নির্দিষ্ট কোনো ডাম্পিং স্টেশন নেই, তাই বিভিন্ন মামলায় আটককৃত যানবাহনগুলো থানা-ফাঁড়ি কিংবা ট্রাফিক বিভাগের কার্যালয় প্রাঙ্গনে রাখতে হচ্ছে। এছাড়া মামলার আলামত হিসেবে জব্দ গাড়িগুলো রাখা হচ্ছে থানা কম্পাউন্ড ও আদালতের মালখানা কম্পাউন্ডের সামনের খোলা জায়গায়, আর দুর্ঘটনাকবলিত গাড়িগুলোকে রাখা হচ্ছে নগরের ব্যস্ততম সড়কগুলোর পাশে।

এসব জায়গায় রাখা গাড়িগুলো অযত্ন-অবহেলায় থাকে বলে বেশ কিছুদিন পরে তা নষ্ট কিংবা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায় বলে অভিযোগ চালক ও মালিকদের।

যদিও কাগজপত্রবিহীন গাড়িগুলো আইনি জটিলতা ও মামলার দীর্ঘসূত্রতার কারণে নিদিষ্ট সময়ে যাচ্ছে না নিলামে তোলা। ফলে এসব যানবাহন অবহেলা আর অযত্নে একেবারে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।

বরিশাল নগরের আলেকান্দা এলাকার বাসিন্দা ও অটোরিকশাচালক সোহাগ জানান, তিনি স্থানীয় এক ব্যক্তির মালিকানাধীন অটোরিকশা চালাতেন। নিয়ম ভঙ্গ করে যাত্রী নিয়ে একদিন বরিশাল নগরের সদররোডে গিয়েছিলেন, আর তখন ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা সেটিকে জব্দ করে। আর জব্দ করে গাড়িটি নতুনবাজার ফাঁড়িতে পাঠায়। এরপর নির্ধারিত তারিখে মামলার জরিমানার টাকা দিয়ে গাড়ি ছাড়িয়ে আনেন। তবে সেসময় দেখতে পান তার গাড়িতে থাকা নতুন ব্যাটারি পরিবর্তন হয়ে বিকল কিছু ব্যাটারি লাগানো।

তিনি বলেন, গাড়ি ছাড়াতে পেরেই খুশি হয়েছি, পুলিশকে আর এ বিষয়ে কিছু বলতে যাইনি, কোনো ভুল আবার তারা ধরে বসেন। কারণ ওই জায়গাতে থাকা অনেক গাড়ির অবস্থা এমন যে দীর্ঘসময়েও তা ছাড়াতে আসেননি বা পারেননি মালিকরা।

অপরদিকে মোটরসাইকেল চালক আদনান বলেন, অটোরিকশাসহ থ্রি-হুইলার যানবাহনগুলো যেভাবেই রাখা হোক না কেন মোটরসাইকেলগুলো রাখা ট্রাফিক অফিসের সামনের পার্কিংয়ে। সেখানে খোলা আকাশের নিচে রোদ-বৃষ্টিতে গাড়িগুলোর যেমন ক্ষতি হয়, তেমনি অল্প জায়গায় অনেক গাড়ি আটক রাখতে গিয়ে রং চটে যাওয়াসহ যন্ত্রাংশের ক্ষতি সাধন হচ্ছে। অনেকে গাড়িকে রক্ষা করতে পলিথিন দিয়ে সেখানেই ঠেকে রাখার চেষ্টা করেন। যা আমার গাড়ি আটকের সময়ও করতে হয়েছে।এর পরিপ্রেক্ষিতে আটককৃত গাড়িগুলো রক্ষণাবেক্ষণে নিদিষ্ট কর্মী নিয়োগেরও দাবি জানিয়েছেন অনেকে।

বরিশাল নগরের বাসিন্দা ও আইনজীবী আতিকুর রহমান জুয়েল বলেন, মাদক অথবা চাঞ্চল্যকর মামলার আলামত হিসেবে আটককৃত যানবাহন ছাড়া অন্য মামলায় আটককৃত যানবাহনগুলোরে বিষয়ে সরকার চাইলে দ্রুত নিলামের মাধ্যমে রাজস্ব আদায় করতে পারে। এছাড়া বিভিন্ন মামলায় আটককৃত গাড়িগুলো রক্ষণাবেক্ষণে নিদিষ্ট কর্মী নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে।

এদিকে ডাম্পিংয়ের জন্য জায়গা পেতে সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) এস এম তানভীর আরাফাত।

তিনি বলেন, সিটি মেয়র আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, তিনি রিসেন্টলি আমাদের ডাম্পিংয়ের জন্য জায়গা করে দেবেন।

বরিশাল মেট্রোপলিটনের চারটি থানা, ট্রাফিক অফিস, পুলিশ লাইন্স ও ফাঁড়িগুলোতেও পড়ে রয়েছে অসংখ্য যানবাহন। আর এসব জায়গা মিলিয়ে কয়েক শতাধিক যানবাহন আটক রয়েছে।

Share